৬৪৬ কোটি টাকায় হবে খনন
দুই কূপে ১০ বছরে মিলবে ৫৬ বিসিএফ গ্যাস
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘ডুপিটিলা-১ ও কৈলাশটিলা-৯ নম্বর কূপ (অনুসন্ধান কূপ) খনন’ শীর্ষক প্রকল্প উত্থাপিত হচ্ছে। কূপ দুটি খনন করে গ্যাস পাওয়া গেলে ১০ বছরে ৫৬ বিসিএফ গ্যাস উৎপাদন করা সম্ভব হবে। গ্যাসের চাহিদা পূরণ করতেই প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সভাশেষে প্রকল্পগুলোর সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
প্রকল্পের আওতায় কূপ খননের জন্য ৬৪৬ কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি অক্টোবর ২০২৪ সাল থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (এসজিএফএল) এবং পেট্রোবাংলার একটি কোম্পানি।
গ্যাসের নতুন কূপের অনুসন্ধানসহ ১০ প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ২৪৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা, প্রকল্প ঋণ থেকে ২০৫ কোটি ৭৯ লাখ এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৪০৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
নতুন কূপ খননে গ্যাস পাওয়া গেলে ডুপিটিলা-১ ও কৈলাশটিলা-৯ নম্বর কূপ থেকে প্রথম ৫ বছরে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে এবং পরবর্তী ৫ বছরে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট হারে অর্থাৎ ১০ বছরে মোট ৫৬ বিসিএফ গ্যাস উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদার আংশিক পূরণ করা সম্ভব হবে। প্রকল্পের আওতায় নতুন দুটি অনুসন্ধান কূপ (ডুপিটিলা-১ ও কৈলাশটিলা-৯) খনন; বৈদেশিক পরামর্শক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগ এবং ১৪ কিলোমিটার গ্যাস গ্যাদারিং পাইপলাইন নির্মাণ করা হবে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) আওতাধীন সিলেট (হরিপুর), কৈলাশটিলা, বিয়ানীবাজার ও রশিদপুর গ্যাস ক্ষেত্রের মোট ১৪টি কূপ থেকে বর্তমানে দৈনিক কমবেশি ১০৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। বাপেক্স ২০১৭ সালে ডুপিটিলা স্ট্রাকচারে সম্পাদিত ২ডি সিসমিক জরিপের ওপর ভিত্তি করে প্রণীত ‘ইন্টারপ্রিটেশন রিপোর্ট অন ডুপিটিলা প্রসপেক্ট’ প্রতিবেদনে ভুলিটিলা কাঠামোতে তিনটি নতুন অনুসন্ধান কূপ (প্রপোজড-১, প্রপোজড-২ ও প্রপোজড-৩) খননের প্রস্তাব করা হয়। পরবর্তীতে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড গঠিত কমিটি প্রস্তাবিত তিনটি প্রসপেক্টসের মধ্যে তুলনামূলক বিচারে একটি প্রসপেক্ট (প্রপোজড-৩) ডুপিটিলা-১ নম্বর কূপ (অনুসন্ধান) খননের সুপারিশ করেছে।
এছাড়া বৈদেশিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান অ্যাসক্লামবারজার সিকো ইনচ ২০১৮ সালে সম্পাদিত ত্রিমাত্রিক (৩ডি) সিসমিক জরিপ রিভিউ ফলাফলের ভিত্তিতে কৈলাশটিলা কাঠামোতে ৪টি প্রসপেক্ট (এসএলবি-১, এসএলবি-২, এসএলবি-৩ ও এসএলবি-৪) এ ৪টি অনুসন্ধান উন্নয়ন কূপ খননের সুপারিশ করেছে এবং পেট্রোবাংলার মাধ্যমে গঠিত কমিটি এসএলবি-৪ প্রসপেক্টকে কৈলাশটিলা-৯নম্বর কূপ (অনুসন্ধান) হিসেবে খননের সুপারিশ করেছে। এ জন্য এ প্রকল্পের আওতায় ডুপিটিলা-১ (প্রপোজড-৩) এবং কৈলাশটিলা-৯ (এসএলবি-৪) নামে দুটি অনুসন্ধান কূপ খননের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এমওএস/এমএএইচ/জিকেএস