এসআইবিএল

পুনর্বহাল চান চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা, ব্যাংক বলছে নিয়োগ ‘অবৈধ’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:৩৬ এএম, ০৩ জানুয়ারি ২০২৫

চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। তারা ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থানও নেন। তাদের দাবি, বিনা কারণে ও বিনা নোটিশে তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এই কর্মকর্তাদের নিয়োগকে ‘অবৈধ’ দাবি করছেন।

ব্যাংকটি বলছে, ব্যাংকের সার্ভিস রুলস মোতাবেক এবং নিয়োগপত্রের ধারা ১০ অনুযায়ী অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের মদতে চাকরিচ্যুত কিছু কর্মকর্তা ব্যাংকের সামনে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছেন।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল)।

এসআইবিএল ব্যাংক বলছে, ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এস আলম গ্রুপের অবৈধ নিয়োগ দেওয়া ৫৭৯ জন কর্মকর্তাকে সদ্যবিদায়ী বছরের ২৯ অক্টোবর চাকরিচ্যুত করে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকের সার্ভিস রুলস মোতাবেক এবং নিয়োগপত্রের ধারা ১০ অনুযায়ী শিক্ষানবীশ সময়কালে ব্যাংক যেকোনো সময় বিনা নোটিশে যে কোনো কর্মকর্তাকে চাকুরিচ্যুত করার অধিকার রাখে। সে পরিপ্রেক্ষিতে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করা হয়।

‘পরবর্তী সময়ে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ চাকরি পুনর্বহালের দাবী জানিয়ে ব্যাংকের কাছে আবেদন করেন। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যেকের সঙ্গে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে শুনানির আয়োজন করা হয়। শুনানির পর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তাদের চাকরিতে পুনর্বহাল সম্ভব নয় উল্লেখ করে চিঠি দেয়।’

চিঠি পাওয়ার পর গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছেন। তারা লাগাতার ব্যাংকের সামনে অবস্থান করছেন। যার ফলে ব্যাংকের গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন এবং সাধারণ জনগণের স্বাভাবিক চলাফেরা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

রাজধানীর মতিঝিলের সর্বোচ্চ স্থাপনা সিটি সেন্টারের সামনে এ ধরনের কার্যক্রম এই ভবনের অন্য অফিসগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও স্বাভাবিক চলাফেরা বাধগ্রস্ত করছে বলে জানায় ব্যাংকটি।

ব্যাংকটি বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, চট্টগ্রামের পটিয়া এলাকার প্রায় ২০০০ কর্মকর্তা নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগ পেয়ে এখনো এসআইবিএলে কর্মরত রয়েছেন। এসব কর্মকর্তার সহযোগিতায় এবং এস আলম গ্রুপের মদতে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছেন। তাদের এ পদক্ষেপ ব্যাংকিং খাত তথা রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।

প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে চিঠির মাধ্যমে অবহিত করা হয়। তাদের (প্রশাসন) পক্ষ থেকে জানানো হয়, দ্রুত তারা এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন।

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম সাদিকুল ইসলাম এফসিএমএ বলেন, ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিয়োগপত্রের ধারা মেনেই অবৈধভাবে এস আলম গ্রুপের নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। খুবই দুঃখজনক যে, এস আলমের পৃষ্ঠপোষকতায় তারা এ ধরনের বিশৃঙ্খলা করে নৈরাজ্যের সৃষ্টি করছে, যা রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। এর ফলে সাধারণ জনগণ তথা ব্যাংকের গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হচ্ছে, যা মোটেই কাম্য নয়।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় মদতে এস আলম গ্রুপ দেশের ব্যাংকিং খাতে ভয়াবহ দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে চরম অরাজকতার সৃষ্টি করেছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক যখন ব্যাংকিং খাত সংস্কারে ইতিবাচক ও প্রশংসনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে তখন এস আলমের মদতপুষ্ট একটি গোষ্ঠী আবারও অরাজকতা তৈরিতে সক্রিয়।

ইএআর/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।