ফের অস্থির ডলার বাজার
আসন্ন রমজান মাসকে কেন্দ্র করে আমদানি পণ্যের চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে এ চাহিদা বেড়েছে। তবে এর বিপরীতে ডলারের জোগান কম। এ কারণেই অতিরিক্ত চাহিদা পূরণের জন্য ব্যাংকগুলো ১২০ টাকা ঘোষিত দরের চেয়ে কমপক্ষে আট টাকা বেশি দিয়ে রেমিট্যান্স কিনছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে খোলাবাজারেও।
আর এর সুযোগ নিয়ে একটি অসাধুচক্র খোলাবাজারে ১২১ টাকার জায়গায় ১২৮ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত ডলার বিক্রি করছে। এতে ডলার বাজার আবারও অস্থির হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে ডলার বাজার অস্থিরতার সঙ্গে সন্দেহভাজন অন্তত ১৩টি ব্যাংকের কাছে ডলার বেচাকেনার তথ্য তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারের অস্থিরতার কারণ অনুসন্ধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে মনিটরিং জোরদারের কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ব্যাংকখাত সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের ব্যাংকগুলোকে চলতি মাসের মধ্যে পুরোনো আমদানি দায় পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর এ কারণেই ব্যাংকগুলো বেশি দামে ডলার কিনছে। ব্যাংকগুলোর প্রতিযোগিতায় বেশি প্রবাসী আয় আসছে দোশে।
এদিকে চলতি মাসের প্রথম ২১ দিনে দুই বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। এর ফলে মোট রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। আইএমএফের পরামর্শে বিপিএম-৬ হিসাবে তা ১৯ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার। আর দেশের ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ প্রায় ১৫ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার। যা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্য ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়নের চেয়ে সামান্য কম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ব্যাংকগুলোর ডলারের সর্বোচ্চ বেঁধে দেওয়া দর এখন ১২০ টাকা। এটি গত জুনে ছিল ১১৮ টাকা এবং ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ছিল ১১০ টাকা। সে হিসাবে এক বছরে ডলারের ঘোষিত দর বেড়েছে ১০ টাকা। যদিও তা বাজারের বাস্তবতার সঙ্গে তুলনা করলে বেড়েছে ১৮ টাকা।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী বলেন, এক্সচেঞ্জ কোম্পানিগুলো ১২৪ টাকা থেকে ১২৫ টাকা ৬০ পয়সায় ডলার কিনছে। তাদের কাছ থেকে বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। প্রতিবছর ডিসেম্বরে ন্যায় এবারও বেশি আমদানি বিল পরিশোধের সম্ভাবনা করতে হচ্ছে। তেল, রাসায়নিক সার ও রমজানের পণ্য আমদানির জন্য বেশি ডলার প্রয়োজন। আর এসব কারণে ডলারের চাহিদা বেড়েছে।
রাজধানীর পল্টনের একটি একচেঞ্জ হাউজের বিক্রয়কর্মী আনসারী বলেন, খোলাবাজারে প্রতি ডলার কেনা হচ্ছে ১২৬-১২৮ টাকা এবং বিক্রি হচ্ছে ১২৯ টাকা। মাত্র ১০ দিন আগেও খোলাবাজারে ১২৩-১২৪ টাকায় লেনদেন হয়েছে ডলার। মূলত ডিসেম্বরে অনেকেই ছুটি কাটাতে বিদেশে যাচ্ছেন। সেজন্য বাড়তি চাহিদা দেখা দিয়েছে।
ব্যাংকের মতো খোলাবাজারেও রোববার ডলারের লেনদেনের ঘোষিত দর ১২০-১২১ টাকা ছিল। যা গত জুনে ছিল ১১৯-১২০ টাকা এবং গত বছরের ডিসেম্বরে ছিল ১১২-১১৩ টাকা। সে হিসাবে এক বছরে বেড়েছে প্রায় আট টাকা। তবে বিদ্যমান বাজারের তুলনায় বেড়েছে ১৬ টাকা।
ইএআর/বিএ