বাজেট জনমুখী করতে আর্থিকখাতে সুশাসন জরুরি
বর্তমানে বাজেটে প্রান্তিক পর্যায়ের জনসাধারণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে না। গতানুগতিক ধারায় কয়েকটি ব্যবসায়ী সংগঠনের মতামত নেয়া হলেও পরবর্তীতে তা অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। এজন্য বাজেটকে আরও জনবান্ধব করতে আর্থিক খাতে সুশাসন ও কার্যকর সংসদীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।
অন্যদিকে আগামী বাজেটে ৬টি বিষয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার। যা শিগগিরই অনুমোদন দেয়া হবে।
শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেটরী রিচার্জ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনৈতিক বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (ডুয়েডা) আয়োজিত এক সাংবাদিক কর্মশালায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ঢাবির অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এ তাজলিম, পিপিআরসির এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, ডুয়েডা’র সভাপতি প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবদ্ধ উপস্থাপন করেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জামাল আহমেদ।
ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেটকে জনবান্ধব করতে হবে। ভোক্তা বা প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা রীতি চালু করে বাজেটে তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। এজন্য আর্থিক খাতে সুশাসন বাড়ানো জরুরি।
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে শুধু সূচকে উন্নতি দেখালেই চলবে না। মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ এর কোটা ছাড়িয়েছে এটা ভাল। কিন্তু এই সূচকের উন্নতির পেছনে যথাযথ যুক্তি থাকতে হবে। বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠতে হবে। তাহলে অর্থনীতিতে সূচকের উন্নতির সঙ্গে বাস্তবতার মিল পাওয়া যাবে।
এম এ তাজলিম বলেন, উন্নত দেশে বাজেট নিয়ে এতো বেশি মাথা ঘামানো হয় না। কারণ সেসব দেশগুলোতে বাজেটের মাধ্যমে জনসাধারণের প্রত্যাশা খুব কম। কিন্তু বাংলাদেশে এর সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা অনেক বেশি, তাই প্রত্যাশাও অনেক বেশি। এজন্য বাজেট হওয়া উচিত জনবান্ধব।
জামাল আহমেদ মূল প্রবদ্ধে বলেন, দেশের বাজেট বাস্তবায়নে মূল সমস্যা অর্থ সংকট। অন্যদিকে সরকার উন্নয়ন বাজেট (এডিপি)-সহ বেশ কয়েকটি খাতে অর্থ ব্যয় করার ইচ্ছা থাকলেও পারছে না। কারণ সক্ষমতা যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টকে কাজে লাগাতে হলে দক্ষতা বাড়াতে হবে। দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি ছাড়া কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভভ নয়। এজন্য ৬টি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে আগামী বাজেট প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার। এগুলো হলো- স্বাস্থ্য ও শিক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ডিজিটাল বাংলাদেশ, কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও রফতানি আয় বাড়ানো।
এমএ/একে/এমএস