মাহমুদ জিনস কারখানা অথরিটির ওপর হামলার অভিযোগ, বিজিএমইএর উদ্বেগ

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:০০ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০২৪

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় অবস্থিত মাহমুদ জিনস কারখানা অথরিটির ওপর শ্রমিক নামধারী কিছু দুষ্কৃতকারী হামলা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) বলেছে, এটি পোশাকশিল্পে নতুন করে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

বিজিএমইএ জানিয়েছে, পোশাকশিল্প একটি চ্যালেঞ্জিং সময় পার করে সবেমাত্র স্থিতিশীলতা অর্জন করেছে। এ রকম একটি সময়ে গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় অবস্থিত মাহমুদ জিনস কারখানায় শ্রমিক নামধারী কিছু দুষ্কৃতকারী কারখানা কর্তৃপক্ষের ওপর হামলা করছে।

মাহমুদ জিনস লিমিটেড একটি কমপ্লায়েন্ট কারখানা। ২০২২ সালে মাহমুদ জিনস লিমিটেডকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান কোলস এক বছর মেয়াদি ক্রয়াদেশের বুকিং দিলে কারখানাটি ১২০ কোটি টাকার সুতা কেনে। এরই মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ক্রেতা কোলস ক্রয়াদেশ ৫২ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে। কোভিড সমস্যা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই প্রতিষ্ঠানটি এ আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, তা ছাড়া কারখানাটি আগে থেকেই পর্যাপ্ত গ্যাসও পাচ্ছিল না। এ পরিস্থিতেতে একটি ভালো মানের কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে বাধ্য হয়।

গত ৯ অক্টোবর শ্রম ভবনে অনুষ্ঠিত কলকারখানা অধিদপ্তরের নেতৃত্বে ত্রিপক্ষীয় একটি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২৩ অক্টোবর কারখানার শ্রমিকদের সেপ্টেম্বর মাসের মজুরি বাবদ ৩ দশমিক ১৫ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়। ১৬ নভেম্বর স্টাফদের বকেয়া মজুরি থেকে দুই কোটি টাকাও পরিশোধ করা হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, শ্রমিক ও স্টাফদের চূড়ান্ত পাওনা, সার্ভিস বেনিফিট ও ছুটির টাকা বাবদ প্রায় ২০ কোটি টাকা ২৮ নভেম্বর পরিশোধ করার কথা ছিল। এই টাকা পরিশোধ করার জন্য কারখানার মালিক তার গুলশানের বাড়িটি বিক্রির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেন। তবে পেমেন্ট না পাওয়ার কারণে ২৮ নভেম্বর শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন। মালিক বিষয়টি নিয়ে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায়ও বসেন। সেই মোতাবেক, কারখানা যাবতীয় বকেয়া পাওনা আগামী ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ এবং ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ পরিশোধ করবে—এ মর্মে অঙ্গীকার দেয় বিজিএমইএ। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়।

অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হলো, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে পাওনা পরিশোধ নিয়ে কারখানার মালিকের ছেলে মো. রাফি মাহমুদ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় শ্রমিক নামধারী কিছু উসকানিদাতা, দুষ্কৃতকারী হঠাৎ করে তার ওপর আক্রমণ করে এবং আহত করে ফ্যাক্টরিতে নিয়ে আটকে রাখে। পরে টহলরত সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। আলোচনার মধ্যে এ রকম হামলা অনভিপ্রেত।

বিজিএমইএ মনে করে, এ ধরনের ঔদ্ধত্য সমগ্র শিল্পের ওপর আঘাত। যে শিল্প দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি, যে শিল্প প্রত্যক্ষভাবে ৪০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে, যে শিল্প পরোক্ষভাবে দেশের ৫ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকার সুরাহা করেছে, তার ওপর এ আঘাত মোটেও কাম্য নয়। এ ঘটনা বহির্বিশ্বে এ দেশের শিল্প সম্পর্কে ভুল বার্তা দেবে।

বিজিএমইএ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সংস্থাসমূহকে পোশাকশিল্পে সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সক্রিয় থেকে সহযোগিতা প্রদান করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। প্রতিটি পোশাক কারখানার নিরাপত্তা প্রদানের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

যারা উসকানি দিয়ে শিল্পকে অস্থিতিশীল করার অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে, শিল্প ও অর্থনীতিকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে, বিজিএমইএ তাদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছে।

এমএএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।