চড়া দামে আটকা তেল-আলু-পেঁয়াজ, স্বস্তি আমনের নতুন চালে
বাজারে নতুন করে দাম না বাড়লেও চড়া দামে আটকে আছে ভোজ্যতেল, আলু ও পেঁয়াজ। তবে স্বস্তির খবর, আমনের নতুন চালের সরবরাহ শুরু হওয়ায় দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দামও কমেছে।
অন্যদিকে, বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়লেও দামে তেমন প্রভাব পড়েনি। মাছের বাজারেও খুব বেশি পরিবর্তন নেই। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে নতুন আমন ধানের চাল আসায় দাম কেজিপ্রতি কমেছে ৩ থেকে ৪ টাকা। প্রতি কেজি মোটা চাল (গুটি স্বর্ণা ও চায়না ইরি) ৫০ থেকে ৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এ ধরনের চালের কেজি ছিল ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা।
বাজারে সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয় বিআর-২৮ ও পায়জাম জাতীয় চাল। এ ধরনের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৯ থেকে ৬২ টাকায়। এ মানের চালের দর গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। সে হিসাবে কেজিতে কমেছে সর্বোচ্চ ৩ টাকা। এছাড়া ৩ টাকার মতো কমে মিনিকেট বা চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকায়।
রামপুরা বাজারের চাল বিক্রেতা ইউনুস হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ ধরে আমনের নতুন চাল আসছে। এ কারণে দামও কমছে।
- আরও পড়ুন
- ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির জন্য তেল-ডাল-চিনি কিনছে সরকার
- শুল্ক কমালেও পণ্যের দাম কমেনি, এটিই আফসোস: অর্থ উপদেষ্টা
তবে বাজারে বোতলজাত ভোজ্যতেলের সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি দেখা গেছে। বিশেষ করে এক ও দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বেশিরভাগ দোকানে দেখা যায়নি। পাঁচ লিটারের বোতল থাকলেও বিক্রি হচ্ছে নির্ধারিত দরে, অর্থাৎ ৮১৮ টাকায়। সপ্তাহ দুয়েক আগে যা কেনা যেতো ৭৯০ থেকে ৮১০ টাকায়।
তবে খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েলের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। যে কারণে গত সপ্তাহে বেশি থাকলেও এখন পাম অয়েলের দাম লিটারে ১০ টাকার মতো কমেছে। প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকার আশপাশ। খোলা সয়াবিনের লিটার কিনতে খরচ হচ্ছে ১৬৫ থেকে ১৬৭ টাকা।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানি ছাড়া অন্য কোনো কোম্পানির বোতলজাত সয়াবিন তেল মিলছে না। যেসব কোম্পানির তেল পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোও চাহিদার তুলনায় কম। বিশেষত এক ও দুই লিটারের বোতলের সরবরাহ খুবই কম।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজ ও আলুর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গত সপ্তাহের মতো দেশি ভালো মানের পেঁয়াজের কেজি ১১৫ থেকে ১২০, দেশি হাইব্রিডের কেজি ১১০ থেকে ১১৫ এবং ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ৯৮ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, প্রতি কেজি নতুন আলু মানভেদে ৯০ থেকে ১১০ এবং পুরোনো আলুর কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে বিক্রি হওয়া নতুন আলু ভারত থেকে আমদানি করা। স্থানীয় আলু ক্ষেত থেকে ওঠার আগ পর্যন্ত দাম কমার সুযোগ কম।
বাজারে বেড়েছে শীতকালীন সবজির সরবরাহ। তবে সে তুলনায় দামে প্রভাব পড়েনি। প্রতি কেজি গোল বেগুন ৭০ থেকে ১০০, লম্বা বেগুন ৬০ থেকে ৭০, মানভেদে শিম ৫০ থেকে ৮০, পটোল ৫০ থেকে ৬০, ঢ্যাঁড়স ৬০ থেকে ৭০, উচ্ছে (ছোট জাত) ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি পিস ফুলকপি আকারভেদে ৩০ থেকে ৫০ টাকা, লাউয়ের পিস ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। মানভেদে কাঁচামরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১৪০ টাকায়।
তবে স্থিতিশীল রয়েছে ডিম-মুরগির দাম। আগের মতোই ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের ডিমের ডজন বড় বাজারে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হলেও মহল্লার দোকানিরা রাখছেন ১৫০ টাকা।
এনএইচ/এমকেআর/জিকেএস