পতনের বাজারে শ্যামপুর সুগারের চমক
গত সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের। এই পতনের বাজারে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছি সমস্যায় জর্জরিত শ্যামপুর সুগার মিলস লিমিটেড।
গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশের কাছে কোম্পানিটি আগ্রহের শীর্ষ চলে আসে। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে দাম বাড়ার শীর্ষস্থান দখল করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে বেড়েছে ১২ কোটি টাকার বেশি। শেয়ারের এমন দাম বাড়লেও বছরের পর বছর ধরে কোম্পানিটি পচা ‘জেড’ গ্রুপের তালিকায় রয়েছে।
গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৪ টাকা ৩০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সম্মিলিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটের প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ১১৪ টাকা ৫০ পয়সা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ছিল ৯০ টাকা ২০ পয়সা।
শেয়ার দামে এমন উত্থান হওয়া কোম্পানিটি সর্বশেষ কবে বিনিয়োগকালীদের লভ্যাংশ দিয়েছে সে সংক্রান্ত কোনো তথ্য ডিএসইর ওয়েবসাইটে নেই। এমনকি কোম্পানিটির রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ৬০০ কোটি টাকা। বছরের পর বছর লোকসান করায় কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারে না। ফলে বছরের পর বছর ধরে কোম্পানিটির স্থান হয়েছে জেড গ্রুপে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ৪৩ টাকা ৬২ পয়সা লোকসান করে। তার আগের বছর ২০২২ সালে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ৫৩ টাকা ৩ পয়সা। ২০২১ সালে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ১২৫ টাকা ১৪ পয়সা। তার আগে ২০২০ সালে ১২১ টাকা ৩৮ পয়সা এবং ২০১৯ সালে ১২৬ টাকা ২৯ পয়সা শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়।
১৯৯৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৫ কোটি টাকা। আর শেয়ার সংখ্যা ৫০ লাখ। এর মধ্যে ৫১ শতাংশ শেয়ার আছে সরকারের কাছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪৭ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে এক দশমিক ৮৩ শতাংশ শেয়ার আছে।
শ্যামপুর সুগার মিলের পরেই গত সপ্তাহে দাম বাড়ার তালিকায় ছিল মেঘনা ইন্স্যুরেন্স। সপ্তাহজুড়ে এই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ। ২২ দশমিক ১০ শতাংশ দাম বাড়ার মাধ্যমে পরের স্থানে রয়েছে প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স।
এছাড়া গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সর দাম বেড়েছে ২১ দশমিক ১৩ শতাংশ। এছাড়া সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের ২১ দশমিক ১২ শতাংশ, এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের ১৯ দশমিক ১৭ শতাংশ, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের ১৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপয়ার্ডের ১৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের ১৮ দশমিক ১৫ শতংশ এবং জিল বাংলা সুগার মিলের ১৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ দাম বেড়েছে।
এমএএস/কেএসআর/জেআইএম