চাল আমদানির গতি মন্থর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১৩ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০২৪
১০ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিলেও এলসি খুলেছে মাত্র সাড়ে ৯ হাজার টনের

চাল আমদানির ওপর সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করলেও আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। এতে বাজারে অস্বস্তি বাড়ছে। চালের চড়া দামে ভোক্তারাও দিশেহারা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাসুদুল হাসান জানিয়েছেন, সরকার সাড়ে ১০ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিলেও এখন পর্যন্ত মাত্র সাড়ে নয় হাজার টনের এলসি খোলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে খাদ্য ভবনে আমন সংগ্রহ কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। এসময় মূল বক্তব্য রাখেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।

মাসুদুল হাসান বলেন, আমরা ১৩৪ জন ব্যবসায়ীকে চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছি। এসব এলসির বিপরীতে প্রায় সব চাল দেশে প্রবেশও করেছে।

তবে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম চড়া। যে কারণে সরকারিভাবে চাল আমদানিতে মিয়ানমারসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে নেগোসিয়েশন করতে হচ্ছে। এসব দেশকে চালের দাম কমাতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৯ অক্টোবর ট্যারিফ কমিশন বিশ্ববাজারে চালের বাড়তি দামের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করে এনবিআরের কাছে। এর বিপরীতে ৩১ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির ওপর সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়। এরপর খাদ্য মন্ত্রণালয় বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির জন্য ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়।

কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ব্যবসায়ীরা অনুমতি নিলেও আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। জানা যায়, আমন মৌসুমের ধান কাটা শুরু হয়েছে। বাজারে নতুন ধান আসতে শুরু করলে চালের দাম কিছুটা কমতে পারে। যে কারণে ব্যবসায়ীরা এ মুহূর্তে চাল আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ফেনী ও নোয়াখালী অঞ্চলের বন্যাসহ একাধিক বন্যায় চালের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় প্রথমে বলেছিল উৎপাদন কমবে ১০ লাখ টন, পরে জানিয়েছে এটি হয়তো ৬-৭ লাখ টনের মতো হবে। এজন্য আমরা দ্রুত সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করি।

তিনি বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চাল আমদানির ওপর শূন্য শুল্ক আনা হয়। তবে আশার কথা হচ্ছে, উত্তরাঞ্চলে ধানের বাম্পার ফলনের কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। উৎপাদন ভালো হলে আমরা হয়তো কিছুটা ভালো অবস্থানে থাকবো।

আলী ইমাম মজুমদার আরও বলেন, কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। কৃষক যেন ফেয়ার প্রাইস বা ন্যায্যমূল্য পান সেজন্য আমরা ধানের সংগ্রহ মূল্য বাড়িয়েছি। আগামী রোববার থেকে উত্তরাঞ্চলে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু হবে।

তিনি বলেন, খাদ্য মজুতে আমরা খুব বেশি কমফোর্ট জোনে না থাকলেও মজুত বাড়াতে দ্রুত আমন ধান ও চাল কেনা শুরু করছি। একই সঙ্গে আমদানিও দ্রুত করা হবে। বর্তমানে সরকারের কাছে ১২ লাখ ৮৮ হাজার টন খাদ্যের মজুত রয়েছে।

বাজারে চালের চড়া দাম ভোক্তাকে চাপে রাখলেও সরকারি ব্যবস্থাপনাগুলো এটি সহনীয় করতে কাজ করছে কি না- জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমিও মধ্যবিত্ত, নিজেই বাজার করি। আমিও চাপে আছি। কারণ, গত বন্যায় কৃষকের অনেক শীতকালীন সবজিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এনএইচ/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।