‘তৈরি পোশাক খাতে অস্থিরতার জন্য ঝুট ব্যবসা দায়ী’
তৈরি পোশাকখাতে ঝুট শুধু অর্থনীতিক বিষয় নয়, এর পেছনে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয় রয়েছে। পোশাকখাতের অস্থিরতার জন্য অনেক ক্ষেত্রে ঝুট ব্যবসা দায়ী। তাই এ খাতের অস্থিরতা নিরসন ও গার্মেন্টস বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে বৃত্তাকার অর্থনীতির দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য একটি জাতীয় কৌশল প্রণয়ন করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘সুইচ টু আপস্ট্রিম সার্কুলারিটি রাউন্ড টেবিল ডিসকাশন: এ পাথ টুওয়ার্ডস সার্কুলারিটি ইন বাংলাদেশ আরএমজি ইন্ডাস্ট্রি’ শীর্ষক আলোচনায় এ মন্তব্য করেন তারা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. আবদুর রহিম খান বলেন, ‘গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসাকে শুধু অর্থনীতিকভাবে দেখলে হবে না। তৈরি পোশাকখাতের অস্থিরতার জন্য অনেক ক্ষেত্রে ঝুট ব্যবসা দায়ী।’
তিনি বলেন, ‘এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই যে আমাদের বৃত্তাকার অর্থনীতির দিকে যেতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার সবুজ চুক্তিতে আরও বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশে বাংলাদেশের রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। আমরা যদি উৎপাদন ব্যবস্থার সঙ্গে সবুজ চুক্তির সামঞ্জস্য করতে ব্যর্থ হই তাহলে আমাদের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হবে।’
‘সার্কুলারিটির জন্যও একটি জাতীয় কৌশল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সার্কুলারিটি গ্রহণ করার জন্য তিনটি বিষয় অত্যন্ত কাঙ্ক্ষিত। প্রথমত প্রযুক্তি স্থানান্তর, দ্বিতীয়ত আইনি কাঠামো এবং তৃতীয়ত আর্থিক সহায়তা।’ বলেন রহিম।
- আরও পড়ুন
- বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পোশাক শিল্প, কার্যাদেশ হারানোর শঙ্কা
- পোশাক খাতে বেড়েছে নতুন বিনিয়োগ, রপ্তানি কমেছে প্রধান বাজারে
- যে কারণে থামছে না পোশাক খাতের শ্রমিক অসন্তোষ
বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের উপপ্রধান ড. বার্ন্ড স্প্যানিয়ার বলেন, ‘আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবুজ চুক্তির লক্ষ্যগুলো পুনঃনিশ্চিত করি। বাংলাদেশকে সমস্যায় না ফেলে বরং আমরা সার্কুলার ইকোনমি ও টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থায় সহযোগিতা করতে চাই। বৃত্তাকার অর্থনীতিতে বাংলাদেশের জন্য প্রচুর সুযোগ রয়েছে।’
তিনি ম্যানুফ্যাকচারিংকে বিপজ্জনক পদার্থ থেকে মুক্ত করার আহ্বান জানান এবং টেকসই উৎপাদন প্রক্রিয়ার জন্য ইকো-ডিজাইন করার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, ‘ইইউ বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করে বাংলাদেশে সহজে ব্যবসা করা কঠিন। তাই সার্কুলার ইকোনমিসহ বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য সরকারকে এর সমাধান করতে হবে। পুনর্ব্যবহারযোগ্য শিল্পে লাখ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যেতে পারে এবং আমদানির ওপর বাংলাদেশের নির্ভরতা কমাতে পারে।’
একটি সাম্প্রতিক জিআইজেড-এর সমীক্ষা ইঙ্গিত করে, বাংলাদেশের সহায়ক নীতির অভাব পুনর্ব্যবহারযোগ্য শিল্পের গন্তব্য হিসেবে ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলির দিকে অগ্রাধিকার স্থানান্তরিত করতে অবদান রেখেছে।
ঝুট ব্যবসার সঙ্গে রাজনৈতিক অর্থনীতির সম্পর্ক রয়েছে, যেমনটি আমরা আশুলিয়া ও ঢাকার অন্য অংশে সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষের সময় দেখেছি। তাই এ খাতকে আনুষ্ঠানিককরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ বলেন বার্ন্ড।
আইএইচও/এএসএ/এএসএম