ভ্যাট নিয়ে ডিসিসিআইয়ের প্যাকেজ প্রস্তাব


প্রকাশিত: ০২:০৫ পিএম, ০৯ মে ২০১৬

আগামী জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হচ্ছে। নতুন আইনে কোনো প্যাকেজ পদ্ধতির ভ্যাট থাকছে না। ফলে সব ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। তাই দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের কথা বিবেচনা করে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্যাকেজ ভ্যাট রাখার দাবি জানিয়ে প্যাকেজ প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

সোমবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সঙ্গে ডিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদের সাক্ষাৎকালে সংগঠনটির সভাপতি হোসেন খালেদ বাজেট প্রস্তাবে এ দাবি জানান।

বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক প্যাকেজে ভ্যাটের যে হার রয়েছে, তার উপর ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ১০ শতাংশ হারে বাড়িয়ে আদায় করার প্রস্তাব দিয়েছে ডিসিসিআই। এছাড়াও প্যাকেজ প্রস্তাবে ২০২১ সালের পর প্রস্তাবিত ১৫ শতাংশ ভ্যাটকে তিন ভাগে ভাগ করে অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৩ শতাংশ, মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫ শতাংশ এবং বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৭ শতাংশ করার প্রস্তাব করে।

প্রস্তাবে হোসেন খালেদ ঢাকা এবং চট্রগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বর্তমানে বিদ্যমান ভ্যাট ১৪ হাজার টাকার স্থলে ১৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেন।

২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেন। এছাড়াও তিনি কর্পোরেট করের হার ৪৫ শতাংশ কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের ক্ষেত্রে কর্পোরেট করের হার সাড়ে ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন।

রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে দেশব্যাপী করের আওতা বৃদ্ধির সুপারিশ করেন তিনি।

এদিকে, আবাসন খাতে বিদ্যমান মন্দা অবস্থা উত্তরণে রেজিস্ট্রেশন ফি ও স্ট্যাম্প ডিউটি প্রত্যাহার করে ট্রান্সফার ফি প্রবর্তনসহ ভ্যাট ১ শতাংশ থেকে আড়াই শতাংশ পুনঃনির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হতে প্রাপ্ত করমুক্ত লভ্যাংশ আয় ২৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার এবং ব্যাংক বহির্ভূত চ্যানেলের মাধ্যমে লেনদেন ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে ১ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি হোসেন খালেদ বার্ষিক টার্নওভার এক কোটি টাকার নিচে হলে বার্ষিক টার্নওভারের ওপর ২ শতাংশ হারে টার্নওভার কর প্রদানের সুপারিশ করেন।

মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে বিদ্যমান রেওয়াতি শুল্কহার আগামী অর্থবছরেও বজায় রাখার প্রস্তাব করা হয়।

এছাড়াও আমদানি বিকল্প শিল্প গড়ে তোলা, স্থানীয় শিল্পের সংরক্ষণ এবং সম্প্রসারণের লক্ষ্যে চূড়ান্ত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শুল্ক হার আরোপের পাশপাশি প্রয়োজনীয় হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপ বা বৃদ্ধির প্রস্তাব করে ডিসিসিআই।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি হোসেন খালেদ বসতবাড়িতে ব্যবহারের জন্য বর্তমানে বিদ্যমান গ্যাসের পাইপ লাইনের মাধ্যমে এলপিজি গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব করেন।

এসময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, দেশের বেসরকারি খাতকে আরো অধিক হারে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচনে সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মত ঘনবসতিপূর্ণ দেশে কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলন বেশ কষ্টসাধ্য বিষয় এবং এতে অনেক ক্ষেত্রেই নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হয়, সে কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে অধিক হারে গ্যাস ব্যবহার করতে হচ্ছে।

মুহিত জানান, সরকার ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে চাহিদা মাফিক গ্যাস সরবরাহ করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।           

সাক্ষাৎকালে ডিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি হুমায়ুন রশিদ, সহ-সভাপতি খ. আতিক-ই-রাব্বানী, পরিচালক এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান, কামরুল ইসলাম, এফসিএ মামুন আকবর, মোক্তার হোসেন চৌধুরী, ওসমান গনি, রিয়াদ হোসেন, সেলিম আকতার খান এবং ডিসিসিআই মহাসচিব এএইচএম রেজাউল কবির উপস্থিত ছিলেন।

এসআই/একে/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।