চলতি অর্থবছরে এক বিলিয়ন ডলার বিক্রি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৪২ এএম, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

দেশে চলমান সংকটেও ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলার সংকট কাটাতে গত আগস্টের মাঝামাঝি রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি না করার ঘোষণা ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। তবে সে প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেনি। চলতি মাস অক্টোবর পর্যন্ত ডলার বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে প্রায় দেড়শ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে রিজার্ভ থেকে। এতে চলতি অর্থবছরে ডলার বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছে প্রায় ৯৮০ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় এক বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অথচ গত ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণা করে যে, এখন থেকে আর কোনো ব্যাংকের কাছে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী গত অক্টোবর মাসে প্রায় ২০ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে। তার আগে সেপ্টেম্বর মাসে বিক্রি করা হয় ১১০ মিলিয়ন ডলার এবং আগস্টে ডলার বিক্রি করা হয় ১৭০ মিলিয়ন ডলার। আর চলতি অর্থবছরের শুরুতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির পরিমাণ ছিল ৬৮০ মিলিয়ন ডলার।

রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ ঘোষণার পরও ডলার বিক্রির বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা অস্বীকার করে বলেন, আইএমএফের লক্ষ্য অনুযায়ী কিছুটা নিচে রয়েছে রিজার্ভ। তাই রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে না। রিজার্ভ বাড়াতে ডলার বিক্রি বন্ধ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকে মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী (বিপিএম-৬) তা ১৯ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। আর চলতি দায় এবং বকেয়া পাওনা বাবদ প্রায় ৫ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন বাদ দিলে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ (এনআইআর) দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার। সেখান রয়েছে সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবরের আমদানিজনিত আকু বিল বাবদ বাদ যাবে প্রায় ১ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। তখন ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দাঁড়াবে প্রায় ১৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলারে। অথচ গত আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ ছিল যথাক্রমে ১৪ ও ১৫ বিলিয়ন ডলার। আগামী ডিসেম্বরে এই ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের লক্ষ্য প্রায় ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার।

তবে ইতিবাচক দিক তৈরি হয়েছে রেমিট্যান্সে। সেপ্টেম্বরের মতো চলতি মাসেও প্রবাসী আয়ের গতি ঊর্ধ্বমুখী। অক্টোবরের প্রথম ২৬ দিনে ১৯৫ কোটি রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশিয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে) এর পরিমাণ প্রায় ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

সেপ্টেম্বর মাসের পুরো সময়ে ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ ডলার (২.৪০ বিলিয়ন) পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার পর্যন্ত মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। তা বিপিএম-৬ হিসাবে ১৯ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন। গত সেপ্টেম্বর শেষে ছিল ২৪ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ও বিপিএম হিসাবে ১৯ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন। আগস্টে মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম হিসাবে ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। আর চলতি বছরের জুলাইতে মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ হিসাবে তা ২০ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার। এখানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে রিজার্ভ উঠা-নামার মধ্যে থাকলেও বর্তমানে নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে।

ইএআর/জেডএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।