ডিএসইর নতুন চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে মমিনুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন৷ বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ডিএসইর ১০৭৬তম বোর্ড সভায় পর্ষদ সদস্যরা তাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন৷
মমিনুল ইসলামের রয়েছে দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কৌশলগত, প্রযুক্তিগত, পুঁজিবাজার ব্যবসা, পণ্য, প্রক্রিয়া এবং বিধি-বিধান সম্পর্কে ২৫ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা।
এছাড়া জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নীতি কাঠামো এবং সহযোগিতার বিষয়ে রয়েছে তার কাজ করার দক্ষতা৷ তার রয়েছে বিজনেস ট্রান্সফরমেশন, বিজনেস প্রসেস ম্যানেজমেন্ট, লীন ম্যানেজমেন্ট, অপারেশনাল রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এবং সার্ভিস কোয়ালিটির অভিযোজনসহ সিক্স সিগমা ব্ল্যাক বেল্ট। একই সঙ্গে রয়েছে শিক্ষাজীবনে অসামান্য কৃতিত্ব।
মমিনুল ইসলাম সিলিংক অ্যাডভাইজরির প্রতিষ্ঠাতা। প্রতিষ্ঠানটি কৌশলগত আর্থিক উপদেষ্টা সংস্থা, বিনিয়োগ, সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং কৌশলগত রূপান্তরে কাজ করে।
মমিনুল ইসলাম জানুয়ারি ২০১২ সালে বাংলাদেশের একটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সর্বকনিষ্ঠ (৩৫ বছর বয়সে) ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন৷ তিনি জানুয়ারি ২০২৪ সাল পর্যন্ত আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড-এ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷ তার আগে তিনি আগস্ট ২০০৮ থেকে জানুয়ারি ২০১২ পর্যন্ত উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং এপ্রিল ২০০৬ থেকে জুলাই ২০০৮ পর্যন্ত অপারেশন ও প্রযুক্তি প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷
এছাড়াও তিনি অক্টোবর ২০০৫ থেকে মার্চ ২০০৬ পর্যন্ত স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে হেড অব অপারেশনাল রিস্ক, প্রকল্প এবং বিসিপি এবং রিইঞ্জিনিয়ারিং ও সার্ভিস কোয়ালিটি প্রধান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মে ২০০১ থেকে অক্টোবর ২০০৫ পর্যন্ত আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংকে, রিইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রজেক্টস, জানুয়ারি ২০০০ থেকে মে ২০০১ পর্যন্ত একই প্রতিষ্ঠানে রেমিট্যান্স বিভাগে অফিসার হিসেবে কাজ করেন। মমিনুল ইসলাম ১৯৯৯ সালে চট্টগ্রামে আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংকে অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
তার রয়েছে নেতৃত্ব, গ্রাহককেন্দ্রিকতা, কৌশলগত যোগ্যতা, যোগাযোগে দক্ষতা, সততা ও উত্তম নাগরিকত্ব। আর্থিক খাতের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নিয়ন্ত্রক এবং আইনি কাঠামো, টিম উন্নয়ন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, অপারেশনাল এক্সিলেন্স ও স্টেকহোল্ডার ব্যবস্থাপনায়ও তার অসামান্য দক্ষতা রয়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্বের ক্ষেত্রেও তার রয়েছে অনন্য ভূমিকা। তিনি ২০২৩ সালে অ্যাসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউটস–এশিয়া প্যাসিফিক (ADFIAP) এর চেয়ারম্যান, ২০২০-২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন (BLFCA) এর চেয়ারম্যান, ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি) এর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷ বর্তমানে তিনি শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধীদের জন্য কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বিকাশের জন্য একটি দাতব্য সংস্থা ‘অদম্য ফাউন্ডেশন’র ভাইস চেয়ারম্যান৷
শিক্ষাজীবনে অসামান্য কৃতিত্বের অধিকারী এই ব্যক্তি ২০১৭ সালে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে ভাইস-চ্যান্সেলর স্বর্ণপদকসহ এমএস, ১৯৯৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) থেকে ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ১৯৯৪ সালে যশোর বোর্ডের ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ থেকে সম্মিলিত মেধাতালিকায় ২০তম হয়ে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট এবং ১৯৯২ সালে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ থেকে সম্মিলিত মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হয়ে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট সম্পন্ন করেন।
তার শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবনে বিভিন্ন সময়ে তিনি বিভিন্ন পুরস্কার এবং বিশেষত্বে ভূষিত হন। এর মধ্যে কাতারের মাসকাতে অ্যাসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউট-এশিয়া প্যাসিফিক (এডিএফআইএপি)-এর বার্ষিক সভায় ২০২০ সালে ‘আউটস্ট্যান্ডিং সিইও অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হন৷
মমিনুল ইসলাম ২০০৪ সালে AEB অপারেশন সংস্থার সর্বোচ্চ স্বীকৃতি গ্লোবাল স্ট্রাকচার্ড প্রোডাক্ট রিভিউ প্রজেক্টের প্রিমিয়ার পারফরমার্স ক্লাব অ্যাওয়ার্ড, ২০০৩ সালে অপারেশন প্রসেসেস এবং স্ট্রাকচার রিইঞ্জিনিয়ারিং, ব্যবসার ধারাবাহিকতা পরিকল্পনা এবং EAST কার্যক্রমের জন্য Excellence Award এবং ২০০১ সালে কেবল ট্রান্সফার এবং ইনওয়ার্ড রেমিটেন্স সিস্টেম উন্নয়নের জন্য Excellence Award বিজয়ী হন৷
তিনি ২০০৪ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংকের মূল প্রকল্প রিসোর্স হিসেবে গ্লোবাল ট্যালেন্ট দলে অন্তর্ভুক্তি হন। এছাড়া তিনি ২০০৩ সালে কর্মচারী সার্ভের অ্যাকশন টিমের AEB অপারেশন (ESAT) প্রিমিয়ার পারফরমার্স ক্লাব অ্যাওয়ার্ড এবং ২০০১ সালে AEB কেবল ট্রান্সফার এবং ইনওয়ার্ড রেমিটেন্স অপারেশনস সিস্টেম উন্নয়ন ও বিকাশের প্রিমিয়ার পারফরমার্স ক্লাব অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হন।
১৯৯২ এবং ১৯৯৪ সালের এসএসসি এবং এইচএসসিতে অসামান্য একাডেমিক ফলাফলের জন্য তিনি ‘প্রাইম মিনিস্টারস’ পুরস্কার পান।
বিএসইসি সাতজন ব্যক্তিকে ডিএসইর স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে অনুমোদন দেন। তারা হলেন- বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) অধ্যাপক এবং সাভার আর্মি ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মহাপরিচালক অধ্যাপক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, পিএইচডি (ফেলো), এমবিএ (আইবিএ), পিএসসি, এমডিএস, জিএসসি, পিপিই (ইউএসএ); অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, পুঁজিবাজার, বিমা এবং নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাহিদ হোসেন, পিএইচডি; ঢাকা সেনাানবাসের ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মফিজুল ইসলাম রাশেদ, এএফডব্লিউসি, পিএসসি; মেটলাইফ বাংলাদেশের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দ হাম্মাদুল করিম; রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন যৌথ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ডাটা সেন্টার এবং ডিজাসটার রিকোভারি সাইট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাইবার সিকিউরিটি ইউনিটের চিফ ইনফরমেশন সিকিউরিটি অফিসার (লিয়েন) মোহাম্মদ ইশাক মিয়া; কৌশলগত আর্থিক উপদেষ্টা সংস্থা সিলিংক অ্যাডভাইজরির প্রতিষ্ঠাতা মমিনুল ইসলাম; এবং FINS অ্যালায়েন্স রিস্ক অ্যাডভাইজরি অ্যান্ড কনসালটেন্সির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং চিফ কনসালট্যান্ট শাহনাজ সুলতানা৷
এমএএস/এমকেআর/জেআইএম