রফতানি আয়ে সুবাতাস অব্যাহত


প্রকাশিত: ০১:১০ পিএম, ০৫ মে ২০১৬

দেশের রফতানি আয়ে সুবাতাস অব্যাহত রয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দিকে মন্দা থাকলে ছয় মাসের মাথায় রফতানি ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে ফিরে এসেছে। চলতি অর্থ বছরের ১০ মাসে রফতানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২ শতাংশ বেশি আয় করেছে বাংলাদেশ। যা অর্থের হিসাবে প্রায় ৫৩ কোটি ডলার বেশি।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, একক মাস হিসাবে এপ্রিলে রফতানি আয় ডাবল ডিজিটে পৌঁছেছে। অর্থাৎ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এপ্রিল মাসে ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ বেশি রফতানি আয় হয়েছে।

ইপিবি প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে রফতানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৯ দশমিক ২২ শতাংশ। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি।

হিসেব অনুসারে, অর্থ বছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন পণ্য ও সেবা রফতানি করে বাংলাদেশের আয় হয়েছে ২ হাজার ৭৬৩ কোটি ৭২ লাখ মার্কিন ডলার সম পরিমাণ অর্থ। এসময়ে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৭১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার। সেদিক থেকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫২ কোটি ৮২ লাখ ডলার বেশি রফতানি আয় হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ইপিবির সদ্য সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশিষ বসু বলেন, দেশের বাইরে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। ধারাবাহিক রয়তানি প্রবৃদ্ধি তার প্রমাণ।

তিনি বলেন, বছরের শুরুতে বিভিন্ন কারণে যেসব ক্রেতা বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন বলে চিন্তা করছিলেন, তারা সবাই এখন বাংলাদেশ থেকে পণ্য কিনছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের গার্মেন্টস মালিকরা ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী কর্মপরিবেশের উন্নতি করায় রফতানি আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

ইপিবির সর্বশেষ হিসাব বিশ্লেষণে দেখা যায়, একক মাস হিসেবে এপ্রিলে ২৩৯ কোটি ৮৫ লাখ ডলার রফতানি আয় হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা বেশি। এপ্রিলে ২৬৭ কোটি ১০ লাখ ডলার লক্ষ্যেমাত্রার বিপরীতে এ আয় হয়েছে ২৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার । এসময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ।

ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, রফতানি আয়ের সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোষাকে রফতানি আয়ে ভাল প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এ খাত থেকে মোট রফতানি আয়ের প্রায় ৮২ ভাগ এসেছে। এসময়ে নিট পোশাক খাতে এসেছে ১ হাজার ৭৩ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। আর ওভেন পোশাক খাতে রফতানি আয় এসেছে ১ হাজার ১৮৯ কোটি ৯৩ লাখ ডলার। সুতরাং, ছয় মাসে নিট খাতে ৭ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং ওভেন খাতে ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি  আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে এটা একটা ভাল খবর। কিন্তু এতে আত্মতৃপ্তির সুযোগ নেই। আরো এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর রফতানি প্রবৃদ্ধি প্রায় ৩০ শতাংশের মতো। এজন্য বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

এদিকে ইপিবি সূত্র জানায়, রফতানিতে বড় ধরনের মন্দায় চলতি অর্থবছর শুরু হয়েছিল। জুলাই মাসে আগের বছরের চেয়ে রফতানি কমেছিল ১২ শতাংশ। আগস্ট মাসে রফতানি বাড়ে প্রায় ২৮ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে রফতানি কমে ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। চতুর্থ মাসে এসে আবার ঘুরে দাঁড়ায় রফতানি খাত।

অন্যদিকে, অক্টোবর মাসে প্রবৃদ্ধি হয় ২১ দশমিক ১৫ শতাংশ। নভেম্বরে প্রবৃদ্ধি নেমে আসে ১৩ দশমিক ৭৩ শতাংশে। ডিসেম্বরে প্রবৃদ্ধি হয় ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। পরবর্তী দুই মাসও একই ধরা অব্যাহত ছিল।

এমএ/এসকেডি/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।