জুলাইয়ে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২.৮৮ শতাংশ
• চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৩.৮২ বিলিয়ন ডলার, গত বছরের জুলাইয়ে ছিল ৩.৭১ বিলিয়ন
• জুলাইয়ে তৈরি পোশাক পণ্য থেকে রপ্তানি আয় ৩.১৮ বিলিয়ন ডলার, গত বছরের জুলাইয়ে ছিল ৩.০ বিলিয়ন
• জুলাইয়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে রপ্তানি আয় ৯৮.৪ মিলিয়ন ডলার ও কৃষিপণ্যে ৮০.২ মিলিয়ন
চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ আয় করেছে ৩.১৮ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ২.৮৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছিল ৩.০ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে, চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম মাস জুলাইয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ২.৯ শতাংশ বেড়ে ৩.৮২ বিলিয়ন হয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে, বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ৩.৭১ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক গত সপ্তাহে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
ওভেন পণ্য থেকে রপ্তানি আয় ৩.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১.৪৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যেখানে নিট পণ্যের রপ্তানি আয় ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১.৭২ বিলিয়ন ডলারে।
- আরও পড়ুন
- আশুলিয়া শান্ত, ১৭ কারখানা ছাড়া বাকিগুলোতে চলছে উৎপাদন
- পোশাক খাতে স্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য সহযোগিতা চেয়েছে বিজিএমইএ
- নারায়ণগঞ্জে পোশাক কারখানার ঝুট দখলে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
- চলমান সংকট উত্তরণে ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ চায় বিজিএমইএ
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব জাগো নিউজকে বলেন, ‘অর্থবছরের প্রথম মাসে ইতিবাচক সূচনা হওয়া ভালো লক্ষণ। কিন্তু তিন সপ্তাহ ধরে শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হওয়ায় আমরা রপ্তানির প্রবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত।’
‘সাভার ও আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ২০ দিনের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদন বন্ধ থাকায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই পোশাক খাত সমস্যায় পড়েছে। রপ্তানিকারকদের যেমন আকাশপথে পণ্য পাঠাতে হয়, তেমনি অতিরিক্ত চার্জও বহন করতে হয়’, বলে জানান ব্যবসায়ী নেতা।
আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, ‘রপ্তানি প্রবৃদ্ধির ভবিষ্যৎ দিক সম্পর্কে মন্তব্য করতে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।’
- আরও পড়ুন
- ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোতে অস্থিরতার নেপথ্যে
- বাংলাদেশে ভারতের পণ্য রপ্তানি কমেছে ২৮ শতাংশ
- শুল্ক সুবিধা পেয়েও রপ্তানি বাড়েনি চীনে
- তৈরি পোশাক রপ্তানি ভালো করছে নতুন বাজারে
- পোশাক খাতে বেড়েছে নতুন বিনিয়োগ, রপ্তানি কমেছে প্রধান বাজারে
নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা আসন্ন মৌসুমের কাজের আদেশ নিয়ে খুব টেনশনে আছি। কারণ সাম্প্রতিক শ্রমিকদের অস্থিরতা এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে ক্রেতারা ধীরে ধীরে কাজের আদেশ দিচ্ছেন।’
‘রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ইতিবাচকভাবে ধরে রাখতে সরকারকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যদিকে, শ্রমিক অসন্তোষ চলতে থাকলে ক্রেতারা অন্যদেশে চলে যেতে পারে। তাই শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সবাইকে শিল্পের স্বার্থে কাজ করতে হবে।’ যোগ করেন ফজলে শামীম এহসান।
রপ্তানির বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘জুলাই মাসে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি মন্থর। রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আরও বেশি প্রবৃদ্ধি দরকার। রপ্তানি মন্দার জন্য দেশীয় কারণের চেয়ে বৈশ্বিক কারণ বেশি দায়ী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সেখানে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতাকে আরও খারাপ করেছে। এর ফলে আমাদের পণ্যের চাহিদা কমছে।’
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি শিল্পের উৎপাদনকে ব্যাহত করেছে। দুর্বল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও শ্রমিক অসন্তোষের কারণে স্বল্প মেয়াদে শিল্প কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে, বলে জানান এ অর্থনীতিবিদ।
- আরও পড়ুন
- পোশাকের নতুন বাজারে ১৪ বছরে রপ্তানি বেড়েছে ১০ গুণ
- তৈরি পোশাক খাতে অস্থিরতার পেছনে প্রতিবেশী দেশের ইন্ধন রয়েছে
- চট্টগ্রাম বন্দরে পে-অর্ডার জটিলতা, ক্ষতির মুখে আমদানি-রপ্তানি
তিনি দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা ও শ্রমিক অসন্তোষ দূর করার প্রতি জোর দিয়েছেন। অন্যথায়, দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা কঠিন হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, গত জুলাই মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৮০.২ মিলিয়ন ডলার। এখাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১.২ শতাংশ। প্লাস্টিক পণ্য ২০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা এক বছর আগের একই সময়ে ১৬.৫ মিলিয়ন ডলারের তুলনায় ১৮.৭ শতাংশ বেশি।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি আয় ৪.৫ শতাংশ বেড়ে ৯৮.৪ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। পাট ও পাটজাত পণ্যের আয় ১৬ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ৫৯ মিলিয়ন ডলার হয়েছে। বিশেষায়িত টেক্সটাইল সেক্টর ২৬.৬ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এ খাত থেকে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৩১.৭ শতাংশ।
আইএইচও/এমএমএআর/জেআইএম