ট্যুর অপারেটর সেবায় ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি টোয়াবের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৩৩ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড আইনের বিধিমালার বিভিন্ন অসংগতি দূরীকরণ ও মূসক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে পর্যটন শিল্পের বাণিজ্য সংগঠন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এ দাবি জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে টোয়াব সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, ট্যুর অপারেটরদের নিবন্ধন সংক্রান্ত নতুন গেজেটে কিছু নিয়ম ও শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে, যা মেনে চলা আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন। গেজেটে উল্লেখিত বিধিনিষেধ ও নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিধিমালায় দেখা যায়, ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা) লাইসেন্স আবেদনের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা নিবন্ধন সনদ ফি, ১০ লাখ টাকা ব্যাংক স্থিতির সার্টিফিকেট ও ৩ লাখ টাকা জামানত প্রদান করতে হবে। এটা ট্যুর অপারেটরদের জন্য সম্ভব নয়। এতে করে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে নতুন উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হবেন। তিনি বিকাশমান পর্যটন শিল্পের স্বার্থে ট্যুর অপারেটরদের সেবার ওপর মূসক আরোপ রহিত করার দাবিও জানান।

তিনি বলেন, ট্যুর অপারেটররা বিভিন্ন খাত থেকে পর্যটন উপাদান সংগ্রহ করে পর্যটকদের সুবিধা ও আরামদায়ক ভ্রমণ সৃষ্টির কল্পে যে প্যাকেজ তৈরি করেন তার মধ্যেই মূসক অন্তর্ভুক্ত থাকে। হোটেল রুম ভাড়া করার সময়, ট্রান্সপোর্টের টিকিট ক্রয় করার সময়, রেস্টুরেন্টে খাবারের বিল প্রদান করার সময়, বিভিন্ন পর্যটন আকর্ষণীয় স্থাপনা ও অ্যামিউজমেন্ট পার্কে টিকিট ক্রয় করার মূসক দিয় থাকে।

‘এমনকি অন্যান্য পর্যটন সেবার ক্ষেত্রেও তা প্রযোেজ্য। উল্লেখিত সব পর্যটন উপাদান একত্রিত করে ট্যুর অপারেটররা পর্যটকদের সেবা প্রদান করে থাকে। এখন যদি পর্যটন উপাদান সম্মিলিত প্যাকেজে আবার নতুন করে মূসক দাবি করা হয় কিংবা ট্যুর অপারেটর সেবার ওপর ১৫ শতাংশ মূসক ধার্য হলে প্যাকেজ মূল্য তথা ট্রাভেল কস্টিং বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। এতে করে শিল্প বিশেষ করে অর্ন্তগামী ও অভ্যন্তরীণ পর্যটন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, এখন যদি পর্যটন উপাদান সম্মিলিত প্যাকেজে আবার নতুন করে মূসক দাবি করা হয় কিংবা ট্যুর অপারেটর সেবার ওপর ১৫ শতাংশ মূসক ধার্য হলে প্যাকেজ মূল্য তথা ট্রাভেল কস্ট বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। এতে করে গােটা পর্যটন শিল্প বিশেষ করে অর্ন্তগামী ও অভ্যন্তরীণ পর্যটন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যেহেতু পর্যটন শিল্প একটি ব্যাপক ও অনেক সেক্টরেরর সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিদ্যমান মূসক সুবিধা প্রত্যাহার হলে অগ্রসরমান বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশের অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে টোয়াব পর্যটন শিল্পের ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড আইনের বিধিমালায় উল্লেখিত জামানত বাতিল ও বিভিন্ন অসংগতি দূরীকরণ এবং পর্যটন শিল্পের বর্তমান অবস্থার উত্তরণে ট্যুর অপারেটর সেবার ওপর ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবির বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরে।

টোয়াবের পক্ষ থেকে ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পারিচালনা) নবায়ন ফি ও ব্যাংক স্থিতি কমানো ও জামানত বাতিল, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে ইনবাউন্ড ট্যুরিজমকে রপ্তানি পণ্যের স্বীকৃতি, প্রণােদনা ও অন্যান্য সুযােগসুবিধা প্রদান, পর্যটকদের জন্য ব্যবহৃত সড়ক পরিবহন, নৌযান, আবাসন, বিভিন্ন সরঞ্জাম- ইত্যাদিতে করমুক্ত বা রেয়াত সুবিধা দিতে হবে। ইনবাউন্ড ট্যুর অপারেটরদের ব্যাংকিং চ্যানেলে সংগ্রহীত বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্সের টোটাল বিলের ওপর ১০ শতাংশ অগ্রিম কর (এআইটি) কাটা বন্ধ করতে হবে। সারাবছর সুন্দরবনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল চালু রাখা, পার্বত্য অঞ্চলে পর্যটকদের জন্য পারমিশন গ্রহণ সহজ করতে হবে, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে বিকল্প পথ তৈরির দাবিও জানানো হয়।

এ সময় টোয়াবের প্রথম সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সহ-সভাপতি মাে. আনােয়ার হােসেন, সদ্য সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোডের গভর্নিং বডি মেম্বার শিবলুল আজম কোরেশী, টোয়াব পরিচালক (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন) মােহাম্মাদ ইউনুছ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ইএআর/ইএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।