শ্রম সচিব
তৈরি পোশাক খাতে অস্থিরতার পেছনে প্রতিবেশী দেশের ইন্ধন রয়েছে
বৈদেশিক রপ্তানি সংকুচিত হওয়ার জন্য বাংলাদেশের পোশাক শিল্প সম্পর্কে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশনের অপচেষ্টা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। ভুল তথ্য ছড়িয়ে একটি মহল শিল্প এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাতে অস্থিরতার পেছনে প্রতিবেশী দেশের ইন্ধন রয়েছে। এ খাতে অস্থিরতা দীর্ঘায়িত হলে ক্রয়াদেশ অন্য দেশে চলে যেতে পারে। সে কারণে ষড়যন্ত্রকারীরা এ দেশের পোশাক শিল্পে বিশৃঙ্খলা তৈরিতে সচেষ্ট রয়েছে। তবে সরকারের যথাযথ উদ্যোগে অসন্তোষ অনেকাংশে দূর হয়েছে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির অয়োজনে শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে শ্রম অধিকার ও পোশাক খাতে অস্থিরতা নিয়ে এক ছায়া সংসদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সচিব বলেন, বিগত সময়ে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো স্বার্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ব্যবসায়ীরা এমপি-মন্ত্রী হলে স্বার্থের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। একই দেশে দুই ধরনের শ্রম আইন থাকতে পারে না। গত ১৫ বছরে শ্রমিক কল্যাণ তহবিল নিয়ম মেনে পরিচালিত হয়নি। এই তহবিলের টাকা এমন কিছু ব্যাংকে রাখা হয়েছে যেসব ব্যাংক এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এই তহবিলে এক হাজার কোটি টাকা রয়েছে। বর্তমান সরকার এই তহবিল পরিচালনায় সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, শ্রমিকদের বেতন বৈষম্যসহ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত কাউকে কোনোভাবেই গ্রহণ করি না। তবে শ্রমিকদের অযৌক্তিক দাবি-দাওয়ার নামে বিক্ষোভ আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করি না।
বাহিরাগতরা দলবলসহ কারখানায় প্রবেশ করে সাধারণ শ্রমিকদের বিক্ষোভে অংশ নিতে প্ররোচিত করাকে গ্রহণ করি না। আমরা মনে করি পোশাক শিল্প অস্থিতিশীল করে বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত এসব ব্যক্তি। এমনকি দেখা গেছে, শ্রমিক আন্দোলনের উসকানিদাতাদের কেউ কেউ পোশাক শ্রমিক নেতা কিংবা পোশাক শ্রমিকও নয়। অভিযোগ রয়েছে পার্শ্ববর্তী একটি দেশ এই অস্থিতিশীলতা তৈরি করে আমাদের এই পোশাক শিল্পের বাজার দখল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। মালিক শ্রমিক সবাই মিলে পোশাক শিল্পে অহেতুক শ্রমিক অসন্তোষ বন্ধে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ বের করবেন বলে আশা করছি।
তিনি আরও বলেন, বিগত সময়ে শ্রমিক সংগঠনের সমর্থন আদায়ে তথাকথিত কিছু ডামি শ্রমিক সংগঠনকে নিবন্ধন দিয়েছিল তৎকালীন সরকার। এসব শ্রমিক সংগঠনের নিবন্ধন যথাযথ নিয়মে হয়েছে কি না তা অনুসন্ধান করা জরুরি। সম্প্রতি পোশাক খাতে অস্থিরতা তৈরির পেছনে রাজনৈতিক স্বার্থে এসব ইয়েলো ট্রেড ইউনিয়ন কাজ করছে কি না সেটিও অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে শ্রমিকের অধিকার অপেক্ষা রাজনৈতিক স্বার্থই পোশাক খাতে অস্থিরতা তৈরি করছে শীর্ষক প্রস্তাবে প্রাইম ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে তেজগাঁও কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।
আরএএস/এমআইএইচএস/জিকেএস