‘বিগত সরকারের সময়ে করা আমদানি বিল এখন গলার কাটা’
সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও ডলারের সংকট এখনো কাটেনি। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আমদানির জন্য খোলা ঋণপত্রের (এলসি) বিল পরিশোধের মতো প্রয়োজনীয় ডলার নেই বেশিরভাগ ব্যাংকের কাছে। এ অবস্থায় বিগত সরকারের সময়ে করা আমদানি বিলকে গলার কাটা বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারি শীর্ষ ২০ প্রতিষ্ঠানের বিদেশি এলসির মেয়াদোত্তীর্ণ আমদানি বিলের দায় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৩৬ কোটি বা ১১ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের আমদানি বিলের দায় দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০ মিলিয়ন বা ৭ কোটি ডলার। আর এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সর্বোচ্চ দায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি)।
বিপিসির দায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৩৬ কোটি বা ৯ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। এর পরে রয়েছে যথাক্রমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এলসির দায় ৫২ কোটি ডলার; বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) ৪৪ কোটি ডলার; ডিরেক্টোরেট জেনারেল ডিফেন্স পারচেজের (ডিজিডিপি) প্রায় ৩৪ কোটি ডলার; নৌবাহিনীর ২৯ কোটি ডলার; সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রায় ১২ কোটি ডলার; কমান্ড্যান্ট বাংলাদেশ অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিজের ৯ কোটি ডলারের বেশি; পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ৪ কোটি ডলারের বেশি আমদানি দায় রয়েছে।
পুরান ঢাকার এক আমদানিকারক জানান, আগের চেয়ে এলসি খোলা কমায় কিছু ডলার কম খরচ হচ্ছে। এতে ডলার নিয়ে দৌঁড়ঝাপ কমেছে। তবে এখনো আমদানি বিল পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছি, অনেক ব্যাংকে ডলার সংকট রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ডলার সংকটের মধ্যেই বিগত সরকারের আমলের দায়গুলোই এখন গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে দায়ের ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ না হলে বাড়তি সুদ দিতে হবে। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে বকেয়ার জন্য বাড়তি অর্থ চার্জ করবে। আবার বেশি বিলম্ব হলে পরবর্তীতে দেশের এলসি খোলার জন্য বিমুখ হবে বিদেশি অনেক ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা গণমাধ্যমকে বলেন, চলতি অর্থবছরে ১০ বিলিয়ন ডলার এলসি খোলা হয়েছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১২ বিলিয়ন ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনিটরিংয়ে এলসির দায় কমেছে। এতে ডলার সাশ্রয় হচ্ছে। আগের মতো ডলার সংকট নেই, দিনদিন প্রশমিত হচ্ছে। এজন্য ডলার কেনাবেচা খোলাবাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আবার ব্যাংক ও খোলাবাজারে দামের পার্থক্য ১ টাকার কম।
ইএআর/ইএ/এএসএম