শেয়ারবাজার উন্নয়নে টাস্কফোর্স গঠনের দাবি ডিবিএর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:১৬ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শেয়ারবাজারের উন্নয়ন ও বিকাশে টাস্কফোর্স গঠনের জন্য অর্থ উপদেষ্টার কাছে দাবি জানিয়েছে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। এতে সই করেছেন ডিবিএর সভাপতি সাইফুল ইসলাম।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) প্রায় ৭০ বছর ধরে শেয়ারবাজারে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ১৯৯২-৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ৩০ বছরেরও অধিক সময় ধরে এ খাতের প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

এ দুই সংস্থার সৃষ্টি, লক্ষ্য, কার্যকাল, ঐতিহ্য ও ভূমিকা বিবেচনা করলে ‘বাংলাদেশ পুঁজিবাজার’ পুঁজি গঠনের উৎস এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির একটি খাত থেকে অনেক দূরে। দুঃখজনক বিষয় হলো, এই সুদীর্ঘ সময়ে এসেও আমাদের শেয়ারবাজার এখন পর্যন্ত একটি শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যের খাত হিসেবে এবং একটি সর্ব সাধারণের টেকসই আয়ের খাত হিসেবে তৈরি হয়ে ওঠেনি- উল্লেখ করেছে ডিবিএ।

চিঠিতে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাংকিং, অর্থনীতি, সংবিধান প্রভৃতি খাতের সংস্কারের জন্য কয়েকটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও নীতি অনুসরণ করে শেয়ারবাজারের মতো একটি বৃহৎ খাতের উন্নয়ন ও অগ্রগতির লক্ষ্যে আপনি শিগগির শেয়ারবাজার খাতের সংস্কারের জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠনের কথা বিবেচনা করবেন।

টাস্কফোর্স গঠনের দাবি জানানোর পাশাপাশি চিঠিতে শেয়ারবাজার খাতের সংস্কারের জন্য বেশকিছু সুপারিশ করা হয়েছে। ডিবিএ বলছে, বিএসইসি শেয়ারবাজার খাতের উন্নয়ন ঘটিয়ে দেশের শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশে সুবিধা দিতে সফল হয়নি। আমাদের বাজার সম্পূর্ণ ইক্যুইটি নির্ভর। ইক্যুইটি ছাড়া আমাদের বাজারে আর কোনো পণ্য নেই। গত ২০ বছর ধরে বন্ড মার্কেট আলোচনায় থাকলেও এর বিকাশে কার্যকর কিছুই করা হয়নি।

ডিবিএ আরও বলেছে, শেয়ারবাজার থেকে সুফল পেতে আমাদের বিএসইসিকে পণ্যের উন্নয়ন বিকাশকরণ, নিয়ম-নীতি প্রণয়নের পাশাপাশি শীর্ষ পর্যায়ে বিচ্যুতি, অপরাধমূলক কার্যক্রম, ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের তদন্তকাজে এবং এনফোর্সমেন্টের দায়িত্বে নিযুক্ত থাকাটা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের একটি স্বীকৃত পন্থা।

উন্নত বিশ্বের শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার মডেল থেকে দেখা যায় যে, তারা নিয়ম-নীতি প্রণয়নে উদার, কিন্তু ব্যবহার ও বাস্তবায়নে কঠোর। উন্নত বিশ্বের শেয়ারবাজারে প্রচলিত ও প্রতিষ্ঠিত এই মডেল আমাদের শেয়ারবাজার খাতের জন্য বিবেচনা করা যেতে পারে। এ মডেল অনুসরণ করে তারা এসইসির নিচে একটি স্বনিয়ন্ত্রক সংস্থা (এসআরও) প্রতিষ্ঠা করেছে, যে সংস্থাটি সব বাজার মধ্যস্থতাকারীর সমন্বয়ে কাজ করে এবং স্বনিয়ন্ত্রক ও সহায়কের প্রথম সারিতে থেকে অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এছাড়া উচ্চ পর্যায়ের অন্যায় ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসিতে প্রেরণ করে বলে ডিবিএর চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, এই মডেল শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার পরবর্তী ৫ থেকে ১০ বছরের জন্য শেয়ারবাজারের কৌশল নির্ধারণ করে। একই সঙ্গে সে অনুযায়ী পণ্য বিকাশে মনোনিবেশ করে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, কিছু দীর্ঘস্থায়ী পুরোনো সমস্যা আমাদের বাজার বৃদ্ধির পথে অন্তরায় হয়ে আছে। যেমন— সময় অনুপযোগী এবং পুরোনো মার্জিন অ্যাকাউন্ট নীতি, বিনিয়োগকারীর জন্য প্রতিকূল মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থাপনা, আইপিওর যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ এবং প্রাইভেট ইক্যুইটি, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, ডেরিভেটিভস, বিকল্প, ভবিষ্যৎ, বন্ড ট্রেডিং, মর্টগেজ-ব্যাকড সিকিউরিটাইজেশন ইত্যাদি পণ্যের ব্যাপারে কোনো ধরনের দিক-নির্দেশনার অনুপস্থিতি।

ডিবিএ বলছে, সরকারের বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্পগুলোতে অর্থায়নের জন্য শেয়ারবাজারে পণ্যের বিকাশ অত্যাবশ্যক এবং অপরিহার্য। স্থানীয় এবং এনআরবিদের জন্য ‘সঞ্চয়কে বিনিয়োগে’ রূপান্তরিত করতে আমাদের কাজ করা উচিত।

এমএএস/কেএসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।