ক্রেতা সংকটে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন
শেয়ারবাজারে ফের ক্রেতা সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। ক্রেতা সংকটে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দুইশর বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম একদিনে যতোটা কমা সম্ভব ততোটাই কমেছে। সেই সঙ্গে লেনদেন কমে পাঁচশ কোটি টাকার নিচে নেমে গেছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান স্থান করে নিয়েছে। ফলে সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলো।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পড়ে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে দেশ ছেড়ে চলে যান। হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রথম চার কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক প্রায় ৮০০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
তবে শেয়ারবাজারে এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। গত সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে। এ পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে।
এতে লেনদেনের শুরুতেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। লেনদেনে শেষ পর্যন্ত অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। এমনকি লেনদেনের সময় যত গড়াই বাজারে ক্রেতা সংকট ততো বাড়ে। ফলে অনেক কোম্পানির শেয়ার দিনের সর্বনিম্ন দামে বিক্রির চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন অনেক বিনিয়োগকারী।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে মাত্র ১৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৬৬টি প্রতিষ্ঠানের। আর ১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ১২৫ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭৭৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২২০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১২৬ পয়েন্টে নেমে গেছে।
দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৮০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯৯৯ কোটি ১ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৪১৮ কোটি ১২ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে গ্রামীণফোনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৮ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের ২১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২০ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ডিবিএইচ ফাইন্যান্স, ইউসিবি ব্যাংক, টেকনো ড্রাগস, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট এবং ম্যারিকো বাংলাদেশ।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩১৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২২৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২০০টির এবং ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
এমএএস/জেএইচ/জেআইএম