সরবরাহ বাড়ায় কিছুটা কমেছে মাছের দাম
প্রতিদিনই শিথিল হচ্ছে কারফিউ। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পরিস্থিতি। জনজীবনের পাশাপাশি সচল হচ্ছে যান চলাচল ও যোগাযোগ ব্যবস্থাও। এতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের পণ্য সরবরাহ নির্বিঘ্ন হচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারে। নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে।
কোটা আন্দোলন ঘিরে পণ্য সরবরাহ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হওয়ায় দামও বেড়ে গিয়েছিল। শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাছের দাম কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে, যা গত সপ্তাহেই বেড়েছিল।
প্রতিদিন ভোর থেকে রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা ও আশপাশের এলাকার মাছ বিক্রেতারা পাইকারি দামে মাছ কিনতে আসেন মেরুল বাড্ডা ডিআইটি প্রজেক্টের মাছের আড়তে। নিলাম উঠে মাছ, বিক্রি হয় পাইকারি দামে।
সকালে আড়ত ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বিক্রেতারা বাজার থেকে মাছ কিনে ভ্যানে উঠিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরছেন। তারা বলছেন, নতুন করে মাছের দাম বাড়েনি। কিছু ক্ষেত্রে কমেছে। আবার কিছু কিছু মাছের দাম আগের মতোই আছে।
বাজারে আজ ইলিশের পাইকারি দাম ছিল আকাশছোঁয়া। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছের দাম ১০০০ টাকা। আর এক কেজি বা এরচেয়ে বেশি ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০০ টাকায়। এছাড়া জাটকা ইলিশ বিক্রি হয় ৬০০ টাকায়।
এছাড়া ছোট কাছকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে, পুঁটি মাছ ৩৫০ টাকা, পাবদা মাছ ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
সেলিম নামের একজন মাছ বিক্রেতা জাগো নিউজকে জানান, ১০ থেকে ১২ কেজি ওজনের বড় কাতল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাবদা মাছ ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায়, নদীর চিংড়ি ১০০০ টাকা এবং বোয়াল মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সুন্দরবনের নদীর ছোট চিংড়ির কেজি ৭০০ টাকা।
ইটনা ও মিঠামইন এলাকা থেকে মাছ নিয়ে এসেছেন মোহাম্মদ ইউসুফ আলি। তিনি জানান, বাইন মাছ আকারভেদে ৪৫০, ৬০০ ও ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের আইড় মাছের দাম ৯০০ টাকা আর দুই কেজি ওজনের মাছ ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মাঝারি সাইজের চিংড়ির দাম নেওয়া হচ্ছে কেজিপ্রতি ১০০০ টাকা।
মাছ বিক্রেতা জোবায়ের জানান, তার দোকানে ইন্ডিয়ান কাছকি মাছ ১৭০ টাকা আর বরিশালের লইট্টা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। আরেক মাছ বিক্রেতা তারা মিয়ার দোকানে বাগেরহাটের রুই মাছ ২৩০-২৫০ টাকা কেজি আর সাতক্ষীরার গেরের বাগদা চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি দরে।
বাজারে গ্লাসকাপ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়, ছোট রুই ২২০ টাকা আর বড় রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। এছাড়া পাঙাসের কেজি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা কেজিতে।
দুই কেজির বেশি ওজনের কাতল ৩৬০ টাকা কেজি, রুই মাছ ৩৭০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০-২২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া শিং মাছ ৪০০ টাকা কেজি ও গুল্লা মাছ ৫৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে কোরাল মাছ ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
ইলিশ মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ কামাল জানান, নোয়াখালী, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন এলাকার ইলিশ মাছ একসঙ্গে বিক্রি হচ্ছে। ইলিশের এখনো অনেক দাম। জাটকা ৫২০ টাকা কেজি, ৫০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ এক হাজার টাকা আর এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত।
মাছ বিক্রেতা আজগর আলী জানান, বাজারে মাছের সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। বাজারে সামুদ্রিক মাছও আসছে।
খুচরা মাছ বিক্রেতা সাইফ আড়ত থেকে মাছ কিনে ভ্যানে উঠাচ্ছিলেন। তিনি জানান, গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ মাছের দাম কিছুটা কম।
এএএম/এমকেআর/জেআইএম