রাইড শেয়ারিংয়ে ক্ষতি ৫০ কোটি টাকা
মোবাইল ইন্টারনেট না থাকায় রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের এখনো অচলাবস্থা। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হওয়ায় গত সাত দিনে গাড়ি ও মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং খাতে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় জনগণের জানমালের নিরাপত্তা গত ১৭ জুলাই থেকে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
১৮ জুলাই থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ হয়ে যায়। গত ২৩ জুলাই থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তবে এখনো ফেরেনি মোবাইল ইন্টারনেট।
আবার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হলেও ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। কবে নাগাদ এসব স্বাভাবিক হবে তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া অনলাইনে লেনদেনসহ নিত্যদিনের বিভিন্ন কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
২৪ জুলাই এক অনুষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানিয়েছেন, আগামী রোববার বা সোমবারের মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেটও চালু করার ব্যাপারে আশাবাদী।
ইন্টারনেট-সেবা সম্পর্কিত সার্বিক বিষয় নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে বাসাবাড়িতে আজকে রাত থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ব্রডব্যান্ড চালু হবে, যা আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত আমরা পর্যবেক্ষণ করব। রোববার বা সোমবার সারাদেশে মোবাইল ইন্টারনেট আসতে পারে। আমরা দৈনিক ৭০-৮০ কোটি টাকার ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছি।
রাইড শেয়ারিং ব্যবহাকারী যাত্রীরা জানান, ব্রডব্যান্ড চালু হলেও তারা রাইড শেয়ারিং ব্যবহার করতে পারছেন না। কেননা বন্ধ রয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকালে মিরপুর ১২ নম্বরে কথা হয় রাইসুল ইসলাম নামের একজন যাত্রীর সঙ্গে। তিনি জানান, মোবাইল ইন্টারনেট চালু না থাকায় বেশি টাকা খরচ করে চুক্তিভিত্তিক মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে হচ্ছে।
জাগো নিউজকে তিনি বলেন, মিরপুর ১২ নম্বর থেকে গুলশান-২ এ যেতে রাইড শেয়ারিং অ্যাপসে ১৫০-১৮০ টাকা খরচ হয়। সেখানে ২০০- ২৫০ টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে। উবার চালক আবিদ জানান, নিরাপত্তা ও ইন্টারনেট না থাকায় প্রায় ১ সপ্তাহ ধরে তিনি সড়কে গাড়ি নামাচ্ছেন না।
অ্যাপ-বেইসড ড্রাইভারস ইউনিয়ন অব বাংলাদেশের (ডিআরডিইউ) সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে প্রায় ২ হাজার গাড়ি রাইড শেয়ারিং অ্যাপস ব্যবহার করে। দৈনিক এসব গাড়ির চালক প্রায় ৩ কোটি টাকা লেনদেন করেন। সে হিসেবে ৭ দিনে গাড়ি চালকরা প্রায় ২১ কোটি টাকার লেনদেন করতে পারেননি। এছাড়া প্রায় ১ লক্ষাধিক মোটরসাইকেল আপসে চলে। বলা যায় প্রায় ৪ লক্ষাধিক চালক ৭ দিন মোটরসাইকেল বের করতে পারেননি। এই চালকদের কম বেশি আয় দৈনিক ১ হাজার টাকা। দেখা যায় প্রায় ২৮ কোট টাকা এই সময়ে চালকরা আয় করতে পারেননি।
এছাড়া রাইড শেয়ারিং চালকরা কোন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে কি না কিংবা গাড়ি ও মোটরসাইকেলের কোনো ক্ষতি হয়েছে কি না, তা নিরুপণ কাজ চলছে বলেও জানান বেলাল আহমেদ। কাজ ও ইন্টারনেট না থাকায় চালকরা মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন বলে জানান তিনি।
এসএম/এসএনআর/জিকেএস