লাফার্জহোলসিমের মুনাফায় ধস
বিক্রি কমে যাওয়ার পাশাপাশি ব্যয় বৃদ্ধি ও টাকার অবমূল্যায়নের কারণে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত লাফার্জহোলসিমের মুনাফায় ধস নেমেছে। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিল-জুন সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) ৫৩ শতাংশ কমেছে। আর ছয় মাসের (জানুয়ারি-জুন) হিসাবে মুনাফা কমেছে ৩৩ শতাংশ।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পর্ষদ সভা শেষে প্রকাশ করা আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
লাফার্জহোলসিম জানিয়েছে, নির্মাণ খাতে চাহিদা কমায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে নিট বিক্রি ৫ শতাংশ কমেছে। আর ব্যয় বৃদ্ধি এবং টাকার অবমূল্যায়নের কারণে পরিচালন মুনাফা শতকরা ২৫ ভাগ কমেছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৩৪৭ কোটি টাকা। গতবছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয় ৪৬০ কোটি টাকা। অর্থাৎ পরিচালন মুনাফা কমেছে ১১৩ কোটি টাকা বা ২৫ শতাংশ।
এদিকে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে নিট বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা। গত বছর প্রথম ছয় মাসে নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ নিট বিক্রি কমেছে ৮৪ কোটি টাকা বা ৫ শতাংশ।
প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল-জুন সময়ে লাফার্জহোলসিমের শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৬৯ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ১ টাকা ৪৭ পয়সা। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় শেয়ারপ্রতি মুনাফ কমেছে ৭৮ পয়সা বা ৫৩ শতাংশ।
আর জানুয়ারি-জুন সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে, ২ টাকা ৯ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ৩ টাকা ১১ পয়সা। অর্থাৎ ছয় মাসের হিসাবে শেয়ারপ্রতি মুনাফা কমেছে ১ টাকা ২ পয়সা বা ৩৩ শতাংশ।
লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ’র প্রধান নির্বাহী ইকবাল চৌধুরীরর বলেন, বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতি কিছুটা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যার প্রভাব পড়েছে নির্মাণ খাতে। এর ফলে প্রথম ছয় মাসে আমাদের কোম্পানির বিক্রিও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে।
তিনি বলেন, বিক্রির বিভিন্ন চ্যানেলগুলোর সম্প্রসারণ, অ্যাগ্রিগেটস ব্যবসা শক্তিশালী করা, ডিজিটালাইজেশন এবং জিওসাইকেল’র মাধ্যমে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সেবা প্রদান বিষয়ে আমাদের আলোকপাত অব্যাহত রয়েছে। আমরা আশা করছি বছরের বাকি সময়টাতে ব্যয় সংকোচন এবং নতুন নতুন পণ্য উদ্ভাবনের মাধ্যমে ঘুরে দাড়াতে সক্ষম হবো।
লাফার্জহোলসিম থেকে জানানো হয়েছে, কোম্পানির টেকসই ও সার্কুলার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি জিওসাইকেল’র মাধ্যমে দেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে লাফার্জহোলসিম। বছরের প্রথম ছয় মাসে এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে ২৩ হাজার টনেরও বেশি বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে। এরই মধ্যে কোম্পানি সিলেট সিটি করপোরেশন থেকে সিলেট নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শুরু করেছে, যা ভবিষ্যতে থার্মাল সাবস্টিটিইশন রেট বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
এমএএস/এমআরএম/এএসএম