ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার
টানা দরপতন থেকে বেরিয়ে ঈদের আগে দেশের শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় ঈদের আগের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচকও। তবে অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক কমেছে। অবশ্য দুই বাজারেই বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে অব্যাহত দরপতনের মধ্যে পড়ে গত মঙ্গলবার ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৪২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে যয়। ফলে ঈদের আগে হতাশ হয়ে পড়েন বিনিয়োগকারীরা। যারা শেয়ার বিক্রি করে ঈদের খরচ যোগাড় করার চেষ্টা করেন, তারা পড়েন বিপাকে। তবে ঈদকেন্দ্রীক বিক্রির চাপ কমায় শেষ দুই কার্যদিবসে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিললো।
বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২২৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৩টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৫৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১১৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮২১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
ডিএসইর এক সদস্য বলেন, ঈদকেন্দ্রীক বিক্রির চাপ গত মঙ্গলবার শেষ হয়ে গেছে। কারণ মঙ্গলবারের পর যারা শেয়ার বিক্রি করবেন তারা ঈদের আগে আর সেই টাকা নগদ করতে পারবেন না। সে কারণে বুধবার ও বৃহস্পতিবার ঈদকেন্দ্রীক শেয়ার বিক্রির চাপ ছিল না। ফলে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে।
তিনি বলেন, অব্যাহত দরপতনের কারণে ভালো, মন্দ সব ধরনের কোম্পানির শেয়ার দাম অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম এখন অবমূল্যায়িত অবস্থায় রয়েছে। অস্বাভাবিক কিছু না ঘটলে এখন থেকে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোটাই স্বাভাবিক।
এদিকে সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪২৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৫০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৭২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ২২ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিচ হ্যাচারির ২২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৫ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, লাভেলো আইসক্রিম, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ই-জেনারেশন।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৭টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। আগের কর্যদিবসে লেনদেন হয় ১১ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
এমএএস/এমআইএইচএস/জেআইএম