নতুন আরোপিত ও বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহার চায় বিজিএপিএমইএ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১৪ পিএম, ১৩ জুন ২০২৪
রাজধানীর একটি হোটেলে বৃহস্পতিবার ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর বিজিপিএমইএর সংবাদ সম্মেলন। ছবি: জাগো নিউজ

রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং শিল্পের বিকাশ ও অর্থনেতিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে নতুনভাবে আরোপিত ও বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহার চান বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বিজিপিএমইএর সভাপতি মো. শাহরিয়ার।

গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং খাতে উৎসে কর আগামী পাঁচ বছরের জন্য ০.৫০ শতাংশ ধার্যকরণপূর্বক কর্তিত উৎসে করকে চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে নিষ্পত্তি করার দাবি জানান এ ব্যবসায়ী নেতা।

প্রস্তাবিত বাজেটের জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে স্বাগত জানিয়ে শাহরিয়ার বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে একক ব্যক্তির মালিকানাধীনসহ সব কোম্পানির কর্পোরেট কর হ্রাস করায়, ভ্যাট আপিলের ক্ষেত্রে দাবিকৃত অর্থের ২০ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ জমা দেয়ার প্রস্তাব করায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অনেকগুলো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর করের হার অর্ধেক করায়, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করায় আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। তাছাড়া, ইনডিভিজুয়াল ব্যক্তির মতো কোম্পানির ক্ষেত্রেও সর্বজনীন স্ব নির্ধারণী পদ্ধতিতে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা করার জন্যও তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’

‘তবে, আমরা প্রস্তাবিত বাজেটকে জনবান্ধব এবং ব্যবসাবান্ধব হিসেবে বলবো কি না তাতে দ্বিধান্বিত হচ্ছি এ কারণে যে, মূল্যস্ফীতি কম থাকলে কর্মসংস্থান বাড়ে, আয়ের উৎসও বাড়ে, ছোট ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রসারের সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে এ উদ্দেশ্য অর্জনে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। তাছাড়া, যেখানে কর প্রদানকারীদের কর হার বৃদ্ধি করে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে সেখানে অপ্রদর্শিত ও কালো টাকা ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ প্রদানকে আমরা যৌক্তিক মনে করি না।’ বলেন শাহরিয়ার।

বিজিএপিএমইএ সভাপতি লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে দেশীয় শিল্প সুরক্ষার কথা বলা হলেও শিল্প খাতে পূর্বে দেয়া অনেক সুবিধা হ্রাস করা হয়েছে। নতুন বন্ড লাইসেন্স ফি ৫০ হাজার টাকার স্থলে এক লাখ টাকা এবং লাইসেন্স নবায়ন ফি বার্ষিক ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ব্যাংকে গচ্ছিত আমানতের ওপর আবগারী শুল্কহার বৃদ্ধি করা হয়েছে। কাস্টমস আইন ২০২৩-এর ১৭১ ধারায় আমদানিকৃত পণ্যের এইচএস কোডের ভুলজনিত কারণে ২০০ থেকে ৪০০ শতাংশ জরিমানার বিধান করা হয়েছে। শিল্প অঞ্চলের বাইরে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ এবং ব্যাংক ঋণ প্রদান না করার সরকারি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এ সমস্ত পদক্ষেপের কারণে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে, শিল্প প্রতিষ্ঠান ভয়াবহ সংকটে পড়বে, কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে, শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়বে। তাই আমরা দেশ ও জনগণের স্বার্থে নতুনভাবে আরোপিত এ সমস্ত সিদ্ধান্ত ও শুল্ক প্রত্যাহার চাচ্ছি। এ ছাড়াও শিল্প কারখানার জন্য প্রি ফেব্রিকেটেড কারখানা ভবন নির্মাণে আমদানি উপকরনের শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। জ্বালানি সাশ্রয়ী বাতির ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বর্ধিত করে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। শিল্পের স্বার্থে আমরা এ সব কর প্রত্যাহার চাচ্ছি।

শাহরিয়ার জানান, রপ্তানি খাতগুলোকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগী সক্ষম করার লক্ষ্যে রপ্তানির ওপর নগদ প্রণোদনা ক্রমান্বয়ে হ্রাস করা হলেও প্রস্তাবিত বাজেটে যে সমস্ত খাত বর্তমানে উক্ত প্রণোদনা পায় সেগুলো বহাল রাখা হয়েছে। বিগত অর্থবছরের বাজেটে প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকদের অনুকুলে নগদ প্রণোদনা প্রদানের ঘোষণা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। যেহেতু সরকার নগদ প্রণোদনা প্রস্তাবিত বাজেটে অব্যাহত রেখেছে সেহেতু বিগত অর্থবছরে ঘোষিত প্রচ্ছন্ন রপ্তানির অনুকুলে নগদ প্রণোদনা এবারের বাজেটেও অন্তর্ভুক্ত করা এবং উক্ত প্রস্তাবকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার দাবি জানান শাহরিয়ার।

গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং খাতের সরাসরি রপ্তানির অনুকুলে নগদ প্রণোদনাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা; মূলধনী যন্ত্রাংশ, নির্মাণ সামগ্রী এবং অগ্নি ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম আমদানিতে রেয়াতি শুল্ক হারের সুবিধা প্রদান; এক্সপোর্ট রিটেইনিং কোটা অ্যাকাউন্টের ওপর আয়কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ ধার্যকরণ এবং গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং খাতের পণ্য ও সেবা সম্পূর্ণভাবে ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখার আবেদন জানান বিজিএপিএমইএ সভাপতি।

আইএইচও/এমএমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।