এক দশকে এই প্রথম শেয়ার দাম কমার ব্যাখ্যা চাইলো ডিএসই

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:০২ পিএম, ১২ জুন ২০২৪

কারণ ছাড়াই আইডিএলসি ফাইন্যান্সের শেয়ার দাম কমছে। কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এ তথ্য প্রকাশ করেছে। গত এক দশকে দেশের শেয়ারবাজারে এই প্রথম কোনো কোম্পানির শেয়ার দাম কমার ক্ষেত্রে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হলো।

এ তথ্য প্রকাশ করে বুধবার (১২ জুন) ডিএসই থেকে জানানো হয়েছে, আইডিএলসি ফাইন্যান্সের শেয়ার দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটিকে নোটিশ করা হয়। তার জবাবে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শেয়ার দাম কমার ক্ষেত্রে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, ২০১০ সালের আগে বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ার দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছিল। তবে ২০১০ সালের পর দাম কমার ক্ষেত্রে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। শুধু অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ৪ এপ্রিল আইডিএলসি ফাইন্যান্সের প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৩৭ টাকা ৩০ পয়সা। সেখান থেকেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমা শুরু হয়। ধারাবাহিকভাবে শেয়ার দাম কমে এখন ২৭ টাকা ৫০ পয়সায় অবস্থান করছে। অর্থাৎ, দুই মাসে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৯ টাকা ৮০ পয়সা বা ২৬ দশমিক ২৭ শতাংশ।

এই দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতেই এখন ডিএসই থেকে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হলো। অবশ্য শুধু আইডিএলসি ফাইন্যান্স নয়, সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমেছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম ৬০ শতাংশের ওপরও কমেছে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে আইডিএলসি ফাইন্যান্স ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। তার আগের বছর ২০২২ সালেও কোম্পানিটি ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। তবে ২০২১ ও ২০২০ সালে ১৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ করে বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয় এ প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে, সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ এই তিন মাসে কোম্পানিটি সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৮৫ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ৮৩ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা বেড়েছে ২ পয়সা।

মুনাফার পাশাপাশি কোম্পানিটির সম্পদের পরিমাণও বেড়েছে। চলতি বছরের মার্চ শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪৬ টাকা ৫৬ পয়সা। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য ছিল ৪৫ টাকা ৭১ পয়সা।

মুনাফা ও সম্পদ মূল্য বাড়লেও কোম্পানিটির ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ১৭ টাকা ৫৩ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৬ টাকা ৬৯ পয়সা।

৪১৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের এ কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৪১ কোটি ৫৬ লাখ ৯৮ হাজার ৪৮৪টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে আছে ৫৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৩ দশমিক ৭১ শতাংশ, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং বিদেশিদের কাছে আছে ১ দশমিক ১৬ শতাংশ শেয়ার।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, শেয়ার দাম কমলেও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সাম্প্রতিক সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন। বিপরীতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করেছেন। গত এপ্রিলে কোম্পানিটির ২৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ শেয়ার ছিল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে, যা মে মাস শেষে দাঁড়িয়েছে ২৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

অর্থাৎ, এক মাসে কোম্পানিটির দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা, যা বিক্রি করেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। মে মাস শেষে কোম্পানিটির ১৩ দশমিক ৭১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে, যা এপ্রিল শেষে ছিল ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ।

এমএএস/এমকেআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।