বাজেট প্রতিক্রিয়ায় প্রজ্ঞা

আরও সস্তা ও সহজলভ্য হবে তামাকপণ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:১২ এএম, ০৭ জুন ২০২৪

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাশ হলে আরও সস্তা ও সহজলভ্য হবে তামাকপণ্য। দরিদ্র ও তরুণ জনগোষ্ঠী তামাক ব্যবহারে বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে। এতে তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু বাড়বে বলে জানিয়েছে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় প্রতিষ্ঠানটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত বাজেটে নিম্ন স্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরামূল্য ৪৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি শলাকার দাম বাড়ানো হয়েছে মাত্র পঞ্চাশ পয়সা (১১.১১ শতাংশ)। সম্পূরক শুল্ক মাত্র ২ শতাংশ বাড়িয়ে ৫৮ থেকে ৬০ শতাংশ করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে মধ্যম স্তরের ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৬৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০ টাকা (৪.৪৮ শতাংশ), উচ্চ স্তরে ১১৩ টাকা থেকে ১২০ টাকা (৬.১৯ শতাংশ) এবং প্রিমিয়াম বা অতি উচ্চ স্তরের ১০ শলাকার দাম ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা (৬.৬৭ শতাংশ) নির্ধারণ করা হয়েছে। এই তিনটি স্তরেই সম্পূরক শুল্ক মাত্র ০.৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৬৫ থেকে ৬৫.৫ শতাংশ করা হয়েছে। প্রতি দশ গ্রাম জর্দা ও গুলের খুচরা মূল্য যথাক্রমে ৩ টাকা (৬.৬৭ শতাংশ) ও ২ টাকা (৮.৭ শতাংশ) বাড়ানো হয়েছে এবং উভয় ক্ষেত্রেই সম্পূরক শুল্ক অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আবারও বিড়ির দাম ও করহার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী চিনি, আলু, আটাসহ বেশকিছু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ২০২১ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ৪০ শতাংশ থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ প্রস্তাবিত বাজেটে তামাকপণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে ৪.৪৮ শতাংশ থেকে ১১.১১ শতাংশ পর্যন্ত। বিড়ির দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ফলে নিত্যপণ্যের তুলনায় তামাকপণ্য আরও সস্তা হয়ে পড়বে।

মাথাপিছু আয়বৃদ্ধির তুলনায় প্রস্তাবিত দাম বৃদ্ধি কম হওয়ায়, সবধরনের তামাকপণ্য আরও সহজলভ্য হবে। এতে তামাকপণ্যের ব্যবহারজনিত অসুস্থতা বাড়বে এবং সরকারের স্বাস্থ্য ব্যয় বেড়ে যাবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য (সাময়িক) অনুযায়ী, ২০২২-২৩ সালের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জনগণের মাথাপিছু আয় বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ।

আরও পড়ুন

অতি সম্প্রতি প্রকাশিত টোব্যাকোনমিকস সিগারেট ট্যাক্স স্কোর কার্ডের তৃতীয় প্রতিবেদনে বাংলাদেশে সিগারেটের সহজলভ্যতার ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। দাম, সহজলভ্যতা, করকাঠামো এবং খুচরা মূল্যে করের অংশ এই চারটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে সিগারেট ট্যাক্স স্কোর কার্ড তৈরি করা হয়। বাংলাদেশের সার্বিক স্কোর ৫ এর মধ্যে মাত্র ১.১৩, যা আগে ছিল ২.৩৮। মূলত সহজলভ্যতায় শূন্য পাওয়ার কারণেই বাংলাদেশের স্কোর অর্ধেকে নেমে এসেছে। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের আওতায় টোব্যাকোনমিকস টিম ১৭০টি দেশের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় প্রজ্ঞা’র (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, সিগারেট বাজারের ৭৫ শতাংশ দখলে থাকা কমদামি সিগারেটের খুচরামূল্য ও সম্পূরক শুল্ক খুবই সামান্য পরিমাণে বাড়ানো হয়েছে। খুচরামূল্য কমপক্ষে ৬০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৬৩ শতাংশ করা হলে এই স্তরের সিগারেটের সহজলভ্যতা কমবে। এতে তরুণ জনগোষ্ঠী সুরক্ষা পাবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় কয়েক গুণ বাড়বে।

এএএম/এসআইটি/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।