অর্থমন্ত্রী

শিক্ষার প্রাথমিক ধাপেই শিশুরা প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:০৩ পিএম, ০৬ জুন ২০২৪

শিশুদের শিক্ষার প্রাথমিক ধাপেই প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত করে তুলতে সরকার প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় জোর দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

তিনি বলেন, ‘শিশুরাই ভবিষ্যতের দেশ গড়ার কারিগর। আমাদের মূল্য লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। তাই শৈশব থেকেই সব শিশুর হৃদয়ে এ ধারণাকে প্রোথিত করে দেওয়ার জন্য এখন থেকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। এ বিবেচনায় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা কাঠামো ও মূল্যায়ন পদ্ধতি আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শিশুদের শিক্ষার প্রাথমিক ধাপেই প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত করে তুলতে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এসময় তিনি এসব কথা বলেন।

আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় এক লাখের বেশি ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, ইন্টারনেটসহ সাউন্ড সিস্টেম সরবরাহ করে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালু করা হয়েছে। এছাড়া সব উপজেলায় একটি করে বিদ্যালয়ে অত্যাধুনিক ডিজিটাল ক্লাসরুম ও ভাষা ল্যাব স্থাপনের কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনটি করে শ্রেণিকক্ষে ডিজিটাল ক্লাসরুম স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ডিজিটাল প্রযুক্তির অভিযোজনে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রোগ্রামিং সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্য ২০২২ সাল থেকে প্রাথমিকে বিজ্ঞান বইয়ের তৃতীয় শ্রেণি থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ও কোডিং বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৭৯ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। সহকারী শিক্ষকের ২৬ হাজার ৩৬৬টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এর ফলে শিক্ষকের সংখ্যা বেড়ে ২০২২ সালে প্রতি ৩৩ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজনে উন্নীত হয়েছে। যা ২০০৬ সালে প্রতি ৫২ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন ছিল। শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য ৬৭টি পিটিআইতে উচ্চ প্রযুক্তি ক্ষমতাসম্পন্ন আইসিটি ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।’

‘শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যাতে পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশ পান, সে লক্ষ্যে অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক লাখ ২৮ হাজার ৮২০টি শ্রেণিকক্ষ, ৬৫ হাজার ৮৩টি ওয়াশব্লক নির্মাণ এবং ৭৯ হাজার ৯৮৯টি নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে ২৩ হাজার ৩৮৫টি শ্রেণিকক্ষ ও ১৯ হাজার ৯০৩টি ওয়াশব্লক নির্মাণ এবং ৭ হাজার ৫৬৩টি টিউবওয়েল স্থাপনের কাজ চলমান।’

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিক্ষার প্রধান উপকরণ বই যাতে শিক্ষার্থীরা বছরের শুরুতেই পায় সে লক্ষ্যে ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর প্রাথমিক স্তরের শিশুদের ১ জানুয়ারি বই উৎসবের মাধ্যমে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দেওয়া হচ্ছে। ২০১৭ সাল থেকে নিজস্ব বর্ণমালায় ৫টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুদের (প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৩য় শ্রেণি) নিজস্ব মাতৃভাষায় রচিত পাঠ্যপুস্তক ও শিখন- শিখানো সামগ্রীও বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে।’

তিনি জানান, প্রাথমিক শিক্ষার স্তরে শিশুদের ঝরে পড়া রোধ করতে শতভাগ শিক্ষার্থীকে ইএফটির মাধ্যমে উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ১০৪টি উপজেলায় ১৫ হাজার ৪৭০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৭ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর জন্য চলমান স্কুল ফিডিং কার্যক্রম সম্প্রতি শেষ হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের ১৫০টি উপজেলার সব প্রাইমারি স্কুলে স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম চালুর লক্ষ্যে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

এএএইচ/কেএসআর/এমএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।