বাড়ছে সমবায় সমিতির কর, শর্তসাপেক্ষে করপোরেটে আড়াই শতাংশ ছাড়
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৫১ পিএম, ০৬ জুন ২০২৪
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সমবায় সমিতির কর ৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তবে শর্তসাপেক্ষে করপোরেট করহার ২ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এতে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী, সমবায় সমিতির করহার ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন। বর্তমানে সমবায় সমিতির করহার ১৫ শতাংশ। সে হিসেবে আগামী অর্থবছরে সমবায় সমিতির করহার ৫ শতাংশ বাড়বে। এই করহার ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বহাল রাখারও প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
বর্তমানে কোম্পানি করদাতার জন্য খাতভিত্তিক অনেকগুলো করহার কার্যকর রয়েছে। আয়কর আইনে সংজ্ঞায়িত কোম্পানিগুলোর মধ্যে যারা পাবলিকলি ট্রেডেড নয়, এসব কোম্পানির ক্ষেত্রে করহার শর্তসাপেক্ষে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এক্ষেত্রে সব ধরনের আয় ও প্রাপ্তি এবং প্রত্যেক একক লেনদেনে ৫ লাখ টাকার অধিক ও বার্ষিক সর্বমোট ৩৬ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে সব ধরনের ব্যয় ও বিনিয়োগ ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে।
অর্থনীতিকে অধিকতর আনুষ্ঠানিক করা এবং এক ব্যক্তি কোম্পানির প্রতিষ্ঠা উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নন-লিস্টেড কোম্পানির মতোই শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে এক ব্যক্তি কোম্পানির করহার ২২.৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
এছাড়া পরিশোধিত মূলধনের নির্দিষ্ট পরিমাণের অধিক শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে হস্তান্তর হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য করহার শর্তসাপেক্ষে ২২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
করপোরেট করহার কমানোর শর্ত হিসেবে রাখা হয়েছে, সব ধরনের আয় ও প্রাপ্তি এবং প্রত্যেক একক লেনদেনে ৫ লাখ টাকার অধিক ও বার্ষিক সর্বমোট ৩৬ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে সব ধরনের ব্যয় ও বিনিয়োগ অবশ্যই ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে সম্পাদন করতে হবে।
পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানি যাদের পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের অধিক শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে হস্তান্তরিত হয়েছে তাদের করহার সাড়ে ২২ শতাংশের প্রস্তাব করা হয়েছে। শর্ত পরিপালন করলে আড়াই শতংশ রেয়াত পাওয়া যাবে, এতে করহার হবে ২০ শতাংশ।
পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানি যাদের পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ বা ১০ শতাংশের কম শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে হস্তান্তর হয়েছে তাদের করহার ২৫ শতাংশের প্রস্তাব করা হয়েছে। শর্ত পরিপালন করলে আড়াই শতংশ রেয়াত পাওয়া যাবে, এতে করহার হবে সাড়ে ২২ শতাংশ।
আয়কর আইন, ২০২৩ এ সংজ্ঞায়িত কোম্পানির মধ্যে যারা পাবলিকলি ট্রেডেড নয় তাদের করহার সাড়ে ২৭ শতাংশের প্রস্তাব করা হয়েছে। শর্ত পরিপালন করলে আড়াই শতংশ রেয়াত পাওয়া যাবে, এতে করহার হবে ২৫ শতাংশ।
এক ব্যক্তি কোম্পানির করহার সাড়ে ২২ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। শর্ত পরিপালন করলে আড়াই শতংশ রেয়াত পাওয়া যাবে, এতে করহার হবে ২০ শতাংশ।
পাবলিকলি ট্রেডেড-ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (মার্চেন্ট ব্যাংক ব্যতীত) করহার সাড়ে ৩৭ শতাংশের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো রেয়াত প্রযোজ্য নয়।
পাবলিকলি ট্রেডেড নয় এমন ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করহার ৪০ শতাংশের প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো রেয়াত প্রযোজ্য নয়।
মার্চেন্ট ব্যাংকের কারহার সাড়ে ৩৭ শতাংশ। এক্ষেত্রে কোনো রেয়াত প্রযোজ্য নয়।
সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সব ধরনের তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানির করহার ৪৫ শতাংশ এবং আড়াই শতাংশ সারচার্জ। এক্ষেত্রে কোনো রেয়াত প্রযোজ্য নয়।
পাবলিকলি ট্রেডেড মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি যদি তার পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ১০ শতাংশ শেয়ার, যার মধ্যে প্লেসমেন্টে শেয়ার ৫ শতাংশের অধিক থাকতে পারবে না, এ ধরনের কোম্পানির করহার ৪০ শতাংশের প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো রেয়াত প্রযোজ্য নয়।
পাবলিকলি ট্রেডেড নয় এমন মোবাইল ফোন কোম্পানির করহার ৪৫ শতাংশের প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো রেয়াত প্রযোজ্য নয়।
এমএএস/এএসএ/জেআইএম