রেকর্ড উৎপাদন, মঙ্গলবার ১৮ কোটি টাকা কেজির চা হস্তান্তর
অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করে ২০২৩ সালে দেশের চা বাগানগুলোতে ১০২ দশমিক ৯২ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত ১৪টি দেশে প্রায় ১ মিলিয়ন কেজি চা রপ্তানি হয়েছে।
চা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৪ জুন) চা মেলারও আয়োজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মেলার উদ্বোধন করবেন এবং চা মেলা পরিদর্শন করবেন। চা মেলায় দেশের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোর চা প্রদর্শন করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বাংলাদেশের সিলেটের চা বাগানের তৈরি ১৮ কোটি টাকা কেজির চা লন্ডনের ‘লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ’ কোম্পানির প্রতিনিধিরা হস্তান্তর করবেন।
সোমবার (৩ জুন) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, বাণিজ্য সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন এবং চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ চা বোর্ডের উদ্যোগে আগামীকাল চতুর্থবারের মতো ‘জাতীয় চা দিবস’ উদযাপন এবং দ্বিতীয়বারের মতো ‘জাতীয় চা পুরস্কার’ দেওয়া উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, আগামীকাল রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে চা শিল্পে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৮টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৪ প্রদান করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চা দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘স্মার্ট বাংলাদেশের সংকল্প, রপ্তানিমুখী চা শিল্প’।
তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে ১৬৮টি বৃহৎ চা বাগান এবং প্রায় ৮ হাজার ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান রয়েছে। চা শিল্পের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর যুগান্তকারী সব উদ্যোগের ধারাবাহিকতা ও বর্তমান সরকারের নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে দেশের চা শিল্প টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। চা শিল্পের ইতিহাসে উৎপাদনের অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করে ২০২৩ সালে দেশের চা বাগানগুলোতে ১০২ দশমিক ৯২ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে।
আরও পড়ুন:
- আজ চা প্রেমীদের দিন
- এই গরমে দিনে কয় কাপ চা পান করবেন?
- একমাস চা পান না করলে শরীরে যা ঘটে
- খালি পেটে চা পান করলে কী হয়?
টিটু বলেন, ২০২৩ সালে ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের ১৩টি দেশে প্রায় ১ দশমিক ০৪ মিলিয়ন কেজি চা রপ্তানি করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৩৩ শতাংশ বেশি। চা রপ্তানি উৎসাহিতকরণে ৩ শতাংশ রপ্তানি প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে চা রপ্তানিও বাড়ছে। ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত ১৪টি দেশে প্রায় ১ মিলিয়ন কেজি চা রপ্তানি হয়েছে।
তিনি বলেন, চা রপ্তানি বৃদ্ধিতে আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণ, বিদেশে দেশি চায়ের প্রচারণা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী চা তৈরিতে চা শিল্প সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ চা বোর্ড কাজ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামীকাল সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর আগমনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হবে। এরপর তথ্যচিত্র প্রদর্শন ও আলোচনা সভা শেষে দেশের চা শিল্পে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৮টি ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন চা কোম্পানি/ব্যক্তিকে ‘জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৪’ দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের ট্রফি ও সনদ তুলে দেবেন। চা দিবসের উদ্বোধন এবং জাতীয় চা পুরস্কার দেওয়ার পর আয়োজিত চা মেলা পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী। চা মেলাতে দেশের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোর চা প্রদর্শন করা হবে।
দর্শনার্থীদের জন্য দিনব্যাপী চা মেলা উন্মুক্ত থাকবে। এছাড়া চা শিল্পে জাতির পিতার অবদান ও বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নার এবং শ্রীমঙ্গলের টি মিউজিয়ামে রক্ষিত চা শিল্পের দুর্লভ জিনিসপত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, গোল্ডেন বেঙ্গল টি, যার কেজি ১৮ কোটি টাকা। যেটি বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের চা বাগান থেকে তৈরি হচ্ছে। কোম্পানির লোকজন কালকে ফরমালি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ চা হস্তান্তর করবেন। তারপর এগুলো বিভিন্ন দেশের রানী, রাজা এবং নোবেল লরিয়েটদের কাছে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এখন চা রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রায় ৩ শতাংশ ক্যাশ ইনসেন্টিভ দেওয়া হচ্ছে। সমতল অঞ্চলে বিশেষ প্রণোদনা চালু রয়েছে। আশা করছি, আরও বেশি পরিমাণ চা উৎপাদন করতে পারবো।
এমএএস/এমএএইচ/জেআইএম