ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ কমে ১৩.২২ বিলিয়ন ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:২৭ এএম, ১৪ মে ২০২৪
  • # জুনে আইএমএফের লক্ষ্যের ১৪ বিলিয়নের ঘরে
    # আকু বিল পরিশোধ ১.৬২ বিলিয়ন ডলার

রিজার্ভ নিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় পড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নানা পদক্ষেপের পরও কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না রিজার্ভের পতন। সবশেষ এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আওতাধীন দেশগুলোর দুই মাসের আমদানি বিল বাবদ ১ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করায় বড় ধাক্কা লেগেছে রিজার্ভে।

আকুর বিল সমন্বয়ের পর মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে, আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী ১৮ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে চলতি দেনার জন্য সংরক্ষিত আরও ৫ দশমিক শূন্য ৮ ডলার বাদ দিয়ে নেট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার।

যা আগামী জুনের জন্য আইএমএফের নির্ধারিত রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ১৪ দশমিক ৮০ বিলিয়নের চেয়ে ১ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার কম। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, আকুর মাধ্যমে মার্চ-এপ্রিল দুই মাসের ১ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল নিষ্পত্তির পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার। আর মোট রিজার্ভ ২৩ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে চলতি দায় বাবদ ৫ দশমিক ৮ ডলার বাদ দিয়ে এনআইআর বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। আঞ্চলিক আমদানির জন্য আকুর এ পেমেন্ট ব্যবস্থার অধীনে বাংলাদেশসহ নয়টি সদস্য দেশ রয়েছে। দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়া ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করা হয়। প্রতি দুই মাস পর পর আকুর বিল পরিশোধ করতে হয়।

সূত্র জানায়, আইএমএফ ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ কর্মসূচির আওতায় আগামী জুন নাগাদ এনআইআরের হিসাবে রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১৪ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে। সেটিও জুনের মধ্যে পূরণ করা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। গত ৮ মে আইএমএফ এনআইআর বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে ১৪ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রিজার্ভ কমছে। একমাসে তা বাড়ারও তেমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কারণ দেশের রিজার্ভে বৈদেশিক মুদ্রা যেসব উৎস থেকে আসে ও ব্যয় হয় তার মধ্যে ভারসাম্য নেই। আবার আমদানি নিয়ন্ত্রণ করায় বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা কমেছে। এতে দেশের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, রপ্তানিতেও নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে রিজার্ভ লক্ষ্যমাত্রা ১৪ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার এবং ডিসেম্বর শেষে তা ১৫ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ২০২৫ সালের মার্চ শেষে ১৬ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার এবং জুন শেষে তা ১৯ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে ২০২১ সালের আগস্ট মাসের রিজার্ভ রেকর্ড ৪৮ বিলিয়নের ডলার ছিল। মাত্র আড়াই বছরে গ্রেস রিজার্ভ নেমে আসে ২৩ বিলিয়নের ঘরে। আর ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় সোয়া ১৩ বিলিয়ন ডলার। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দুই বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভুলনীতির কারণে অর্থনীতিতে নেতিবাচক দিক তৈরি হয়েছে।

ইএআর/এমএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।