ড. দেবপ্রিয়
পৃথিবীতে মূল্যস্ফীতি কমার সুফল বাংলাদেশে দেওয়া যাচ্ছে না
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি’র ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি পিছিয়ে পড়া মানুষের চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, খাদ্য ও সঞ্চয়ে প্রভাব ফেলছে। এর ফলে বাড়ছে বাল্যবিয়ে। সরকার নানান পদক্ষেপ নিয়েছে। তারপরও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। বিশেষ করে পৃথিবীতে যখন মূল্যস্ফীতির পতন ঘটছে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেই সুফলটা দেওয়া যাচ্ছে না।
রোববার (৫ মে) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে সিপিডি-নাগরিক প্ল্যাটফর্মের ‘নতুন সরকার, জাতীয় বাজেট ও জনমানুষের প্রত্যাশা’ শীর্ষক প্রাক-বাজেট সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
সংলাপে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাজেট প্রত্যাশা নিয়ে জরিপের ফলাফল জানায় সিপিডি। ফলাফলে বলা হয়, আসন্ন ২০২৪-২০২৫ জাতীয় বাজেট নিয়ে ৬৪ শতাংশ মানুষের কোনো প্রত্যাশা নেই। জরিপে ২ হাজার ২৪৯ ব্যক্তির গুগল ফর্মের মতামত ও ৮ হাজার ৪৮টি সোশ্যাল মিডিয়া রিঅ্যাকশন বিবেচনায় নেওয়া হয়।
অর্থনীতিতে সমস্যা ত্রিযোগ ঘটেছে জানিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এই তিনটি সমস্যা হলো- উচ্চ মূল্যস্ফীতি বা অনিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতি। দ্বিতীয় সমস্যা হলো ঋণের ঝুঁকি বাড়ছে। এটা শুধু বৈদেশিক ঋণ নয়, অভ্যন্তরীণ ঋণ। কেননা সরকার বৈদেশিক যে ঋণ নেয় তার দ্বিগুণ নেয় অভ্যন্তরীণ খাত থেকে। এটার দায় দেনা বড় ধরনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তৃতীয় সমস্যা হচ্ছে প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি কর আহরণ ও সরকারের খরচ করার জায়গা কমে যাচ্ছে। খুবই জটিল, আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন বাজেট আসছে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ ব্যাংকের অবক্ষয়ের কথা শুনলে কষ্ট লাগে: ড. ফরাসউদ্দিন
ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশের পরামর্শ আইএমএফের
ঋণের বোঝা আরও বাড়ছে জানিয়ে ড. দেবপ্রিয় বলেন, আগে আমরা বলতাম, আমরা কখনো খেলাপি হই না। সে সুনাম আর থাকছে না। এরই মধ্যে আমরা ৫ বিলিয়ন ডলারের দেনা এখনো দিতে পারছি না। আমাদের গর্বের জায়গায় চিড় ধরেছে। জিডিপিতে সরকারি ঋণ ৩৭ শতাংশ, ব্যক্তিখাতের ঋণ ৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে ৪২ শতাংশ ঋণের বোঝা আছে সরকারের।
অনুষ্ঠানে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এসএম/এমএইচআর/জেআইএম