‘বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে একেবারে নিষেধাজ্ঞা ঠিক হয়নি’

সায়েম সাবু
সায়েম সাবু সায়েম সাবু , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫৯ পিএম, ০২ মে ২০২৪

‘বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু স্পর্শকাতর বিষয় আছে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং গোপনীয়ও বটে। এসব তথ্যের অনেক বিষয়ই মিডিয়ায় প্রকাশ হয়, যা সংশ্লিষ্ট পক্ষ অবগতও থাকে না।’

বলছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ও একাধিক ব্যাংকের একীভূত হওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে জাগো নিউজের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি।

 

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে একেবারে নিষেধাজ্ঞা ঠিক হয়নি। কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের অনুরোধ করতে পারে তোমরা যাচাই-বাছাই করে সংবাদ প্রকাশ করো, যাতে মানুষের আস্থা ঠিক থাকে।

 

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অনেকেই অনুমাননির্ভর তথ্য সংগ্রহ করে সংবাদ প্রকাশ করে। যাচাই-বাছাই না করেই টাকার অংক বসিয়ে দেয়, যেখানে মিল থাকে না। বাংলাদেশ ব্যাংক এমনিতেই নানামুখী চাপে থাকে। রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক আর অর্থনৈতিক নানা চাপ সামলানোর দায়িত্ব থাকে। এর মধ্যে অনুমাননির্ভর সংবাদ প্রকাশ অব্যাহত থাকলে চাপ আরও বাড়ে।’

‘সংবাদের ধর্ম হচ্ছে একজনের পক্ষে লিখলে আরেকজন গোসসা হয়। নেগেটিভ সংবাদ হলে তো সবার জন্যই বিশেষ চাপ তৈরি করে। ক্রমাগত নেগেটিভ সংবাদ প্রকাশ হতে থাকলে মানুষের আস্থা কমতে থাকে ব্যাংকের ওপর। সামগ্রিক অর্থ ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যেমন একাধিক ব্যাংক একীভূত হওয়া নিয়ে নানা আলোচনা বাজারে। এর কিন্তু নেতিবাচক প্রভাবটাই বেশি দেখতে পাচ্ছি।’

‘তবে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে একেবারে নিষেধাজ্ঞা ঠিক হয়নি। কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের অনুরোধ করতে পারে তোমরা যাচাই-বাছাই করে সংবাদ প্রকাশ করো, যাতে মানুষের আস্থা ঠিক থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কিন্তু নিয়মিত ব্রিফ করে। সেখান থেকেও তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। তবে তথ্যপ্রবাহের কোনো জায়গা বাধাগ্রস্ত হোক সেটাও কাম্য হতে পারে না। দায়িত্ব সবাইকেই পালন করতে হবে। ব্যাংকের যেমন দায়িত্ব আছে সঠিক তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া, তেমনি মিডিয়ারও দায়িত্ব আছে যথার্থভাবে তা উপস্থাপন করা।’ বলছিলেন, ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

 

একাধিক ব্যাংক একীভূত হবে নিজেদের মধ্যকার আলোচনাসাপেক্ষে। এখানে আসলে চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক সেখানে দেখভালের দায়িত্ব পালন করতে পারে। জোর করলে সেটা অধিগ্রহণ হয়ে যায়।

 

একাধিক ব্যাংকের একীভূত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘একাধিক ব্যাংক একীভূত হবে নিজেদের মধ্যকার আলোচনাসাপেক্ষে। এখানে আসলে চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক সেখানে দেখভালের দায়িত্ব পালন করতে পারে। জোর করলে সেটা অধিগ্রহণ হয়ে যায়। এটি তো আসলে জোর করার বিষয় নয়।’

‘প্রতিটি ব্যাংকেরই দুর্বল কিছু দিক আছে। সবল হলেও কিছু দিক আছে, যা অন্য ব্যাংকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। জোর করে এক করলে একটি ব্যাংক আরেকটিকে সহজভাবে নাও গ্রহণ করতে পারে। আবার এক হলেও জনবল সহজভাবে সহযোগিতা নাও করতে পারে। এ কারণেই আমি মনে করি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি একটি জটিল বিষয়। যদি এক করতেই হয় তাহলে অধিক সতর্ক থাকতে হবে। কারণ একটি ভুলের কারণে ধস নামানো যাবে না। বরং ব্যাংক খাতের মৌলিক সমস্যা কোথায় তা খুঁজে বের করতে হবে। খেলাপি হয় কেন, মূলধন কমছে কেন- এ প্রশ্নগুলো তো তোলা জরুরি। উত্তর মিললেই সমাধানের পথ বের হবে।’

এএসএস/এএসএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।