অর্থ প্রতিমন্ত্রী
মুনাফার সুযোগ থাকলে উচ্চসুদেও ঋণ নেবেন ব্যবসায়ীরা
আর্থিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খেলাপি ঋণের সমস্যা সমাধান করতে হবে উল্লেখ করে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেছেন, যখন সুদের হার নয় শতাংশ ও ছয় শতাংশ ছিল, তখনো নন-পারফর্মিং লোন আমরা বাড়তে দেখেছি। সুদের হার বাড়লে খেলাপি ঋণ বাড়বে, এমন বিষয় না। আর্থিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এটা দূর করতে হবে। যদি মুনাফা করার সুযোগ থাকে তবে ব্যবসায়ীরা উচ্চসুদেও ঋণ নেবেন।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) আয়োজিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রাক বাজেট আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী বাজেটে প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত রাখা, ফাস্ট-ট্র্যাক অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন, ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বিষয়ে অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে। জ্বালানি তেলের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সমন্বয় করা এবং সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতা সম্প্রসারণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, চলমান বিশ্বায়ন পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, স্মার্ট টেকনোলজির সমন্বয়ে পরিকল্পিত শিল্পায়ন, মূল্যস্ফীতি হ্রাস, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রিজার্ভ বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি এবং বেসরকারি খাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বাস্তবমুখী ও যুগোপযোগী বাজেট প্রণয়ন করা হবে।
সরকার রপ্তানি বাড়াতে চায় জানিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, রপ্তানি বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও এফডিআই বাড়বে। রপ্তানি বৃদ্ধির বিষয়ে সরকার মনোযোগী। রাজস্ব খাতে পরিকল্পিত সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং কর আহরণের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশল প্রণয়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাইভেট সেক্টর ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে টাকা নেয় না কেন? আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেট নিয়ে আরও আলাপ করতে হবে। সব কিছু চাপিয়ে দেওয়া মনে হয় ঠিক হচ্ছে না। সবকিছু আমরা ব্যাংক সিস্টেমের ওপর চাপাচ্ছি।
তিনি বলেন, কয়েকবার আলোচনায় উঠে এসেছে সরকারের ১০০ বিলিয়ন ডলার ঋণ। এই ঋণের সম্পূর্ণটা সরকারের না। সরকারি ঋণ ৬৬ বিলিয়ন ডলারের মতো। বাকি ঋণ বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের। এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। ১০০ বিলিয়নের পুরোটা কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের ঋণ না।
আইসিএমএবি’র সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সেলিম’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আইসিএমএবি’র সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কাউন্সিল সদস্য আরিফ খান। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর এবং এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম।
এমএএস/জেডএইচ/এএসএম