পলিথিন নয় মানুষের হাতে থাকবে সোনালি ব্যাগ: পাটমন্ত্রী
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, সোনালি ব্যাগের জন্য প্লাস্টিক ব্যবসায়ীরা বড় বাধা হলেও আমরা জয়ী হবো। পলিথিন নয় মানুষের হাতে থাকবে পাট থেকে তৈরি সোনালি ব্যাগ। এ ব্যাগের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। জুলাইয়ে ১০০ কোটি টাকা অর্থছাড় হলে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হবে। এজন্য বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) ডেমরায় লতিফ বাওয়ানী জুট মিলস প্রাঙ্গণে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. মোবারক আহমদ খান উদ্ভাবিত সোনালি ব্যাগ উৎপাদন কারখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় বিজ্ঞানী ড. মোবারক আহমদ খান ছাড়াও বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, বিজেএমসির চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মদ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পাটমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে প্লাস্টিক বা পলিথিনের অতি ব্যবহারের কারণে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি বিপদসংকুল পরিবেশে পতিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. মোবারক আহমদ খানকে সার্বিকভাবে সহযোগিতার নির্দেশ দিয়েছেন। প্লাস্টিক বা পলিথিনের বিকল্প হিসেবে আমরা পাট থেকে প্রস্তুত করা এ সোনালি ব্যাগ ব্যবহার করবো। ড. মোবারক আহমদ খানের এ সোনালি ব্যাগ প্রকল্প কোন পর্যায়ে আছে আমরা তা স্বচক্ষে দেখতে এসেছি। আমি মনে করি, বাঙালি জাতি অনেক সৃষ্টিশীল। আমরা এ জায়গায় অনেক এগিয়ে যাবো।’
ড. মোবারক একজন কেমিস্ট হয়েও নিজেই কাস্টমাইজ করে মেশিনারিজ তৈরি করায় তার ভূয়সী প্রশংসা করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে প্রয়োজনীয় পুঁজিসহ একটি প্রকল্প দিয়েছেন। প্রায় ১০০ কোটি টাকার। এ ব্যাপারে যত রকম সহযোগিতা দরকার আমরা করবো। আমরা সামনে পলিথিন ব্যবহারের বিরুদ্ধে যে অভিযান পরিচালনা করবো— তার আগে জনসাধারণের হাতে বিকল্প তুলে দিতে হবে। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি— পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগকে উৎপাদনে এনে ব্যাপকভাবে মানুষের হাতে তুলে দিতে।’
ঈদের পরে কোনো পাট কল চালু হচ্ছে কি না সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ঠিক ঈদের পরেই চালু হবে এমনটা নয়, তবে মিলগুলো তৈরি হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে চালু হবে আশা করি।
এসময় বিজ্ঞানী ড. মোবারক আহমদ খান বলেন, সোনালি ব্যাগ এমন একটা পণ্য যাতে প্লাস্টিক নেই। আপনারা জানেন বায়োডিগ্রেডেবল যে প্লাস্টিক ব্যাগ পাওয়া যায় সেগুলো গতবছরের ২৮ মে প্রতিবেশি দেশ ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কানাডাতেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেননা সেগুলো শতভাগ পরিবেশবান্ধব নয়। আমাদের এ সোনালি ব্যাগ বায়োডিগ্রেডেবল এবং শতভাগ পরিবেশবান্ধব। এটি কার্বন নেগেটিভ পণ্য।
পানিতে গলে যাবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা ভোক্তার চাহিদা অনুয়ায়ী এটা বানাতে পারি। যেমন শপিং ব্যাগ ৮ ঘণ্টায় পানিতে মিশে যায়। এটাকে ৬ মাস মেয়াদি করতে পারি। এখন প্রতিদিন ২৫০ কেজি পরিমাণ উৎপাদন করছি। আমাদের যে সক্ষমতা আছে তাতে এখনি এক টন উৎপাদন করতে পারবো। ১ কেজিতে গড়ে ১০০ ব্যাগ করা যায়।
এনএইচ/এমএএইচ/জিকেএস