হঠাৎ মিউচুয়াল ফান্ডের চমক
দেশের শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত থাকা মিউচুয়াল ফান্ড হঠাৎ করেই চমক দেখিয়েছে। এতে ফ্লোর প্রাইসের ওপরে উঠে এসেছে বেশ কয়েকটি মিউচুয়াল ফান্ড। সেইসঙ্গে একাধিক মিউচুয়াল ফান্ডের দাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ বেড়েছে।
মিউচুয়াল ফান্ড চমক দেখানোয় সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার (২০ ডিসেম্বর) শেয়ারবাজারের লেনদেনেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন বেড়ে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা হয়ে গেছে। সেইসঙ্গে মূল্যসূচকেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ডিএসইর পাশাপাশি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে, লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকায় লেনদেনের একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ১১ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
তবে, লেনদেনের শেষদিকে এসে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। অবশ্য এরমধ্যেও দাম বাড়ার প্রবণতা ধরে রাখে বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ড। ফলে দিনের লেনদেন শেষে দাম বাড়ার তালিকা বড় থাকার পাশাপাশি মূল্যসূচকও বেড়েছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ৮৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৮২টির। আর ১৭৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে ১৮টি।
এর মধ্যে ৭টি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ বেড়েছে। লেনদেনের একপর্যায়ে এসব মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ দামে বিপুল ক্রয় আদেশ আসে। বিপরীতে শূন্য হয়ে পড়ে বিক্রয় আদেশের ঘর।
বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ার দিনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স দশমিক ৯৫ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৬১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৭৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩৬৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ২৪ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৯৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৮৯ কোটি ৪৩ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫২১ কোটি ৮৪ টাকা।। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১৬৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৪ কোটি ৬৮ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশের ৪১ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৮ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিটিক্যালস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- প্যাসেফিক ডেনিমস, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, ইভিন্স টেক্সটাইল, বিডি থাই অ্যালুমেনিয়াম, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, বিচ হ্যাচারি এবং এশিয়ান টাইগার সন্ধানী লাইফ গ্রোথ ফান্ড।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫২টির এবং ৯৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
এমএএস/এমএএইচ/জেআইএম