পাঁচদিনে অলিম্পিক এক্সসরিজের দাম বাড়লো ১০৩ কোটি টাকা
গত সপ্তাহ কিছুটা অস্থিরতার মধ্য দিয়ে পার করেছে দেশের শেয়ারবাজার। এ বাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের দাপট দেখিয়েছে অলিম্পিক এক্সসরিজ। মাত্র পাঁচ দিনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ১০৩ কোটি টাকার ওপরে বেড়ে গেছে।
এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানিটির শেয়ার আগ্রহের শীর্ষে চলে আসে। ফলে সপ্তাহজুড়েই শেয়ারের দাম বেড়েছে। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে এ কোম্পানিটির শেয়ার।
গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৪৭ দশমিক ২৯ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৬ টাকা ১০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে বেড়েছে ১০৩ কোটি ৪১ লাখ ১৪ হাজার ৫৯০ টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা, যা আগের সপ্তাহের শেষে ছিল ১২ টাকা ৯০ পয়সা।
দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০৮ কোটি ৭০ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৭৪ লাখ ১০ হাজার টাকা।
হঠাৎ এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি ২০১৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে ২০২১ সালে ১ শতাংশ নগদ এবং ২০১৯ সালে ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।
এদিকে সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসের ব্যবসায় কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ৮ পয়সা লোকসান করেছে। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি ৮ পয়সা লোকসান হয়।
লোকসানি এই কোম্পানিটির শেয়ারের হঠাৎ দাম বাড়াকে অস্বাভাবিক বলছে, ডিএসই কর্তৃপক্ষ। এ জন্য ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে বার্তাও প্রকাশ করা হয়েছে। ডিএসই জানিয়েছে, কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণে নোটিশ পাঠানো হয়। জবাবে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্প্রতি শেয়ারের যে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে এবং লেনদেন বেড়েছে তার পেছনে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।
কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১৬ কোটি ৯৫ লাখ ২৬ হাজার ৯৮২টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তার কাছে ২৫ দশমিক ৮১ শতাংশ আছে। বাকি ইউনিটের মধ্যে ৫২ দশমিক ৯০ শতাংশই আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২১ দশমিক ২৯ শতাংশ আছে।
অলিম্পিক এক্সসরিজের পরে গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের পছন্দের তালিকায় ছিল আনলিমা ইয়ার্নের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩১ দশমিক ৫৮ শতাংশ। ৩০ দশমিক ৬৪ শতাংশ দাম বাড়ার মাধ্যমে পরের স্থানে রয়েছে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ।
এছাড়া গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা- প্যাসেফিক ডেনিমসের ২৪ দশমিক ৬২ শতাংশ, ওয়াস্টার্ন মেরিন শিপয়ার্ডের ২১ দশমিক ১৯ শতাংশ, ইভিন্স টেক্সটাইলের ২০ শতাংশ, ইউনিয়ন ক্যাপিটালের ১৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ, সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামীক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ১৫ দশমিক ১৩ শতাংশ, শ্যামপুর সুগার মিলের ১৩ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ দাম বেড়েছে।
এমএএস/জেএইচ/এএসএম