গার্মেন্ট শিল্পে বাঁচার মতো মজুরি নির্ধারণ হয়নি
চূড়ান্ত মজুরি কাঠামো গ্রহণযোগ্য হয়নি বলে মনে করছে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র। বহু জুলুম-নির্যাতন ও শ্রমিকের প্রাণের বিনিময়েও গার্মেন্ট শ্রমিকরা বর্তমান বাজারে বাঁচার মতো মজুরি পায়নি।
রোববার (২৬ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে গার্মেন্ট টিইউসির সভাপতি শ্রমিক নেতা মন্টু ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকনেতা সাদেকুর রহমান শামীম বলেছেন, মজুরি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে শ্রমিকদের কাজে ফেরানো হলেও চূড়ান্ত মজুরি কাঠামোতে বর্তমান বাজারে অন্তত বেঁচে থাকার মতো মজুরি নির্ধারণ করেনি মজুরি বোর্ড।
নেতারা বলেন, একজন হেল্পারের সঙ্গে রপ্তানি উপযোগী পণ্য উৎপাদনকারী দক্ষ অপারেটরের মজুরির পার্থক্য অতি নগণ্য হওয়ায় ঘোষিত মজুরি কাঠামো কোনোভাবেই শ্রমিকদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। পাশাপাশি মোট মজুরির ৬৫ শতাংশ বেসিক মজুরি না হওয়ায় শ্রমিকদের ওভারটাইম ভাতা ও অন্যান্য আইনানুগ পাওনা কমে যাবে। ফলে মালিকরা একদিকে অন্যায়ভাবে লাভবান হবে অন্যদিকে শ্রমিকরা প্রতিদিন আরও বেশি আপেক্ষিক শোষণের শিকার হবে।
তারা বলেন, আগামী ৫ বছরের জন্য নির্ধারিত মজুরির বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ১০ শতাংশ না হওয়ায় প্রতি বছর মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকের মজুরি আরও কমে যাবে। গার্মেন্ট শিল্প শতভাগ রপ্তানিমুখী বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন হওয়ায় মালিকরা পণ্যের মূল্য ডলারে পান কিন্তু শ্রমিকের মজুরি টাকায় পরিশোধ করেন। শ্রমিকের মজুরির ১০ শতাংশ বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট না হওয়ার ফলে কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই প্রতি বছর মালিকপক্ষ বাড়তি মুনাফা গুনবেন। অন্যদিকে প্রতি বছর শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি কমতে থাকবে।
নেতারা বলেন, শিক্ষানবিশ নামে একটি ছদ্ম গ্রেড মজুরি কাঠামোতে থাকার কারণে নতুন যোগদানকারী দক্ষ শ্রমিকরা দীর্ঘ সময়ের জন্য ন্যূনতম মজুরি থেকে বঞ্চিত হবে। সরকার শ্রমিকদের দুর্দশার কথা চিন্তা না করে মালিকদের সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ঘোষিত মজুরি কাঠামোতে শ্রমিকপক্ষের সকল দাবি অগ্রাহ্য করেছে। বিবৃতিতে বলা হয় গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি আদায়ের লক্ষ্যে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র লড়াই সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।
ইএআর/এমআরএম/জেআইএম