মন্দা বাজারে ফু-ওয়াং সিরামিকের চমক
হঠাৎ করে দেশের শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের দাপট দেখিয়েছে ফু-ওয়াং সিরামক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। মাত্র পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ দিনে কোম্পানিটির ১০০ টাকার শেয়ারে মুনাফা হয়েছে প্রায় ২৮ টাকা।
কোম্পানিটির শেয়ারের এমন দাম বাড়লেও দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে সার্বিক শেয়ারবাজারেও এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে গেলো সপ্তাহজুড়ে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবকটি মূল্য সূচক কমার পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের গতি।
এমন বাজারে গত সপ্তাহজুড়ে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের কাছে ফু-ওয়াং সিরামিকের শেয়ার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পছন্দের শীর্ষে ছিল। এতে সপ্তাহজুড়েই শেয়ারের দাম বেড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে।
গেলো সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ২৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। টাকার অংকে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪ টাকা ৮০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মেলিতভাবে বেড়েছে ৬৫ কোটি ৪০ লাখ ৯১ হাজার টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ২২ টাকা ২০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষে ছিল ১৭ টাকা ৪০ পয়সা।
শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানি গত ১৯ নভেম্বর ডিএসইর মাধ্যমে ২০২৩ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের জন্য লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানায়। কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের মাত্র ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লভ্যাংশ শুধু সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা পাবেন।
শেয়ার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কোম্পানিাটির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫৮ কোটি ৯৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৭৯ লাখ ২০ হাজার টাকা।
হঠাৎ শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি ১৯৯৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের পর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। তার আগে ২০২১ সালেও ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়ে ছিলো কোম্পানিটি। আর ২০২০ সালে ১ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং ২০১৯ সালে ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।
১৩৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের এই কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ১৩ কোটি ৬২ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩টি। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৬৪ দশমিক ৪০ শতাংশ শেয়ার আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫ দশমিক ২০ শতাংশ এবং বিদেশিদের কাছে দশমিক ৪০ শতাংশ শেয়ার আছে।
ফু-ওয়াং সিরামিকের পর গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ দাম বাড়ার তালিকায় ছিল খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ২৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ১৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ দাম বাড়ার মাধ্যমে পরের স্থানে রয়েছে ইভিন্স টেক্সটাইল।
এছাড়া গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা-ইয়াকিন পলিমারের ১৭ দশমিক ৯২ শতাংশ, প্যাসেফিক ডেনিমসের ১৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ, জিকিউ বলপেনের ১৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ, ঢাকা ডাইংয়ের ১৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ, আজিজ পাইপের ১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের ১১ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডের ১০ দশমিক ১৪ শতাংশ দাম বেড়েছে।
এমএএস/এসএনআর/এএসএম