চিনির শুল্ক ছাড়েও বাজারে প্রভাব নেই
বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে চিনি আমদানিতে কাস্টমস শুল্ক অর্ধেক কমানো হয়েছে। কিন্তু এক সপ্তাহে বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। বরং খোলা চিনির দাম আরও বেড়েছে।
বুধবার ঢাকার খুচরা বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি চিনি প্যাকেটজাত ১৩৫ টাকা এবং খোলা ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিনির এই উচ্চ দামের রাশ টানতে এ বছর সরকার বেশ কয়েকবার শুল্ক ছাড়সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও শেষমেশ তেমন কোনো কাজ হয়নি।
এবার অপরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি টনে ১ হাজার ৫০০ টাকা। এছাড়া কাস্টমস শুল্ক আগে ছিল ৩০০০ টাকা আর অন্যান্য চিনির শুল্ক ছিল ৬০০০ টাকা। বর্তমানে চিনি আমদানিকারকদের ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক ও ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ছাড়াও প্রতিটন চিনিতে নির্দিষ্ট তিন হাজার টাকা কর দিতে হয়। সেটা কমিয়ে এবার ১ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শুল্ক কমানোর পর উল্টো বাড়লো চিনির দাম
সব মিলিয়ে প্রতি কেজি চিনি ভোক্তার হাতে যাওয়া পর্যন্ত মোট কর আরোপিত হয় ৬০ শতাংশের ওপর, টাকার অংকে যা ৪০ থেকে ৪২ টাকা। এখন শুল্ক কমানোর পর আমদানি পর্যায়ে অপরিশোধিত ও পরিশোধিত চিনির সামগ্রিক আমদানি ব্যয় যথাক্রমে প্রতি টনে সাড়ে ৬ হাজার টাকা ও ৯ হাজার টাকা কমে যাওয়ার কথা।
এরপরও চিনির দাম কমার লক্ষণ নেই। বরং পাইকারি বাজারে চিনির দাম প্রতি মণে বেড়েছে ১৩০ টাকা বা ৩ শতাংশ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারি বাজারের প্রতি মণ চিনি (৩৭ দশমিক ৩২ কিলোগ্রাম) ৪ হাজার ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩ হাজার ৯৫০ টাকা।
এদিকে খুচরা বাজারে এখনো পর্যাপ্ত চিনি পাওয়া যাচ্ছে। অনেক দোকানেই খোলা চিনি নেই। আবার কোথাও খোলা চিনি আছে প্যাকেট নেই।
মালিবাগ বাজারের গাজী স্টোরে খোলা চিনি ১৪০ টাকা কেজি আর প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। দোকানি এনামুলের কাছে শুল্ক ছাড়ের পরে দাম কেন বাড়ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন জায়গায় শুল্ক কমেছে? আমরা তো কিছু জানি না। আমরা চিনি পাচ্ছি না, এটাই জানি। আর দাম বাড়ছে বলে শুধু রেগুলার ক্রেতাদের জন্য চিনি রাখছি।
শুভ স্টোরের কালাম হোসেন বলেন, ১৩৫ টাকায় শুধু প্যাকেট চিনি বিক্রি করছি। এর চেয়ে বেশি দাম খোলা চিনির। তাই খোলা চিনি কেউ নিতে চায় না। বাজারে সংকট চলছে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, চিনির খুচরা মূল্য এক মাস আগের তুলনায় ২ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং এক বছর আগের তুলনায় ৪৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়েছে।
এনএইচ/এমআরএম/এমএস