বিমায় ভর করে বাড়লো সূচক-লেনদেন
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। মূলত বিমা কোম্পানিগুলোর ওপর ভর করে বেড়েছে এ সূচক ও লেনদেন।
ডিএসইর পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেন। অবশ্য এ বাজারটিতে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে কম। এর মাধ্যমে টানা চার কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকলো শেয়ারবাজার।
এর আগে নানা ইস্যুতে টানা দুই সপ্তাহ দরপতনের পর গত সপ্তাহের শেষ তিন কার্যদিবস টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকে শেয়ারবাজার। এর মাধ্যমে পতন থেকে বেরিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরার ইঙ্গিত দেয় শেয়ারবাজার। তবে, চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (১৫ অক্টোবর) শেয়ারবাজারে ফের দরপতন হয়। সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি কমে লেনদেনের গতি। ডিএসইতে লেনদেন কমে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে চলে আসে।
অবশ্য এ দরপতন ও লেনদেন খরা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। চলতি সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসেই আবার ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা পায় শেয়ারবাজার। পরের কার্যদিবস মঙ্গলবার ও বুধবারও বাড়ে মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে টানা দুই কার্যদিবসে ৫০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়। পাশাপাশি টানা তিন কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকে বাজার।
এ পরিস্থিতি বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। তবে, লেনদেনের শেষদিকে এসে বিমা বাদে অন্য খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে, একদিকে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আধিপত্য দেখায় বিমা খাত, অন্যদিকে টানা চার কার্যদিবস বাড়ে মূল্যসূচক।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ৭৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৬টির এবং ১৫৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিমা কোম্পানি রয়েছে ৪৮টি। আর দাম কামার তালিকায় বিমা কোম্পানি আছে একটি বিমা কোম্পানি।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১০ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৮৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৬৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৪০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৫৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫১২ কোটি ২১ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৪২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে সোনালী পেপারের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩০ কোটি ৫২ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সি পার্ল বিচ রিসোর্টের ২৩ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জেমিনি সি ফুড, এমারেল্ড অয়েল, লিব্রা ইনফিউশন, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, ফু-ওয়াং ফুড, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স এবং খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৬টির এবং ৫৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
এমএএস/এমএএইচ/জিকেএস