বেঁধে দেওয়ার এক মাস

ডিম-পেঁয়াজের দাম কমেনি উল্টো বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:১৯ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০২৩

আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম এক মাস আগে বেঁধে দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে এ সময়ের ব্যবধানে এসব পণ্যের দাম কমেনি বরং বেড়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ তিন পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছিল গত ১৪ সেপ্টেম্বর। মন্ত্রণালয়েরই বাজারদর মনিটরিং প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, গত এক মাসের ব্যবধানে বাজারে ডিম ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

সংস্থাটির তথ্য বলছে, যখন দাম বেঁধে দেওয়া হয় সে সময় বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ১০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি হালি ডিমের দাম ৫০ থেকে ৫৩ টাকার মধ্যে ছিল, যা এখন ৫২ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে আলুর দাম এক মাসের ব্যবধানে বাড়েনি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর আলুর দাম ছিল ৪৩ থেকে ৫০ টাকা, যা এখন ৪২ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন> বছরে একজনের ভাগে পড়ে ১৩৫ ডিম

যদিও বাজারে এখন কোথাও ৫০ টাকার নিচে আলু মিলছে না। অর্থাৎ প্রকৃতপক্ষে এ পণ্যটিরও দাম বেড়েছে। তবে সেটি টিসিবির বাজার দরে আসেনি।

বেঁধে দেওয়া দাম কার্যকর করতে শুরু থেকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাজারে অভিযান চালাচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় সারাদেশের গড়ে একশোর মতো প্রতিষ্ঠান জরিমানা গুণছে বেশি দামে এসব পণ্য বিক্রি করায়। এছাড়া ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আলু আমদানিরও প্রস্তাবনা রয়েছে, যদিও তাতে অপত্তি রয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের। এসব নানামুখী তৎপরতার পরও এই এক মাসে বাজারে কোনো পণ্যের দাম কমেনি বরং বেড়েছে।

এদিকে, বাজার ঘরে দেখা গেছে, দুই সপ্তাহ ধরে নতুন করে ডিমের বাজারে চলছে অস্থিরতা। শেষ এক সপ্তাহে প্রতি হালি ডিমের দাম পাঁচ টাকা বেড়ে ৫৫ থেকে ৫৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড়বাজারে কিনলে ডিমের ডজন পড়ছে ১৬০ টাকা, যা পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানে ১৬৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের একটি ডিম খেতে গুনতে হচ্ছে ১৫ টাকা। অথচ সরকার প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে।

সরকারের বেঁধে দেওয়া দর নির্ধারণ হয় আরেক পণ্য পেঁয়াজে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি যার দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। এখন দেশি ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

পণ্যের দাম বাড়ায় নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষদের ওপর চাপ আরও বাড়ছে। ফলে বাজারের তালিকায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে তাদের। অধিকাংশ মানুষ অস্বাভাবিক বাজারদরে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

আরও পড়ুন> ডিম আলু পেঁয়াজসহ দাম বেড়েছে সবজি মাছ-মাংসেরও

রামপুরা বাজারে আসা মাসুদ রানা নামে একজন ক্রেতা বলেন, সরকার যেসব পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছে সেগুলোর দাম উল্টো বাড়ছে। তাহলে দাম বেঁধে দেওয়া তামাশা ছাড়া কিছু নয়। কেউ যেন কোনো কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।

সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে প্রতি কেজি পেঁয়াজের ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা, ডিমের ডজন ১৪৪ এবং আলুর কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা মধ্যে বিক্রি হওয়ার কথা।

এদিকে, ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার এ পর্যন্ত ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতিও দিয়েছে। এরপরও দেখা যাচ্ছে, বাজারে দাম না কমে উল্টো বেড়েছে। ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়ার তিন সপ্তাহ পার হলেও এখনও আমদানি করা কোনো ডিম বাজারে আসেনি। এরমধ্যে বৃষ্টির কারণে সরবরাহ বিঘ্ন হয়ে দাম বেড়েছে বলে দাবি খুচরা বিক্রেতাদের।

এনএইচ/এসএনআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।