বিজিএমইএ’র দাবি
রপ্তানির আড়ালে ১০ প্রতিষ্ঠানের ৩০০ কোটি টাকা পাচারের তথ্য মিথ্যা
তৈরিপোশাক রপ্তানির আড়ালে ঢাকা ও গাজীপুরের ১০টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তিন কোটি ৫৩ লাখ ৬৬ হাজার ৯১৮ মার্কিন ডলার পাচারের অভিযোগ ওঠে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। এ নিয়ে দেশের গণমাধ্যমে খবর প্রচার হয়। যেখানে বলা হয়, অর্থপাচালের প্রাথমিক সত্যতা পায় কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
তবে সেই তথ্যকে মিথ্যা ও বানোয়াট বলছে তৈরিপোশাক মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতি বিজিএমইএ। সংগঠনটি জানায়, এর মাধ্যমে দেশকে ছোট করা হয়েছে, বায়ারের কাছে উদ্যোক্তাদের ছোট করা হয়েছে। এর পেছনে একটি চক্র কাজ করছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করে বিজিএমইএ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম মান্নান কচি, সহ-সভাপতি শহিদুল্লা আজিম, সাবেক সভাপতি সালাম মুর্শেদী, সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনসহ কারখানগুলোর মালিকরা।
সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আমরা গভীর বিস্ময়ের সঙ্গে দেখছি, সম্প্রতি কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের জারীকৃত প্রেস বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। দেশের প্রধান দৈনিকগুলো বিভিন্ন শিরোনামে তা ছেপেছে। যেমন ‘পোশাক রপ্তানির আড়ালে ৩০০ কাটি টাকা পাচার’ এ ধরনের চিঠি, এ ধরনের মিডিয়া রিলিজ, এ ধরনের মিডিয়া ক্যাম্পেইন, আসলে কার স্বার্থে করা হয়েছে, এটি আমাদের কাছে একটি বড় প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: পোশাক রপ্তানির আড়ালে ১০ প্রতিষ্ঠানের ৩০০ কোটি টাকা পাচার
‘আমরা মনে করি এটি আমাদের অর্থনীতি, শিল্প, দেশ অথবা সরকার, কাউকেই কোনো সুবিধাজনক অবস্থানে নিচ্ছে না। শুধু
বাধাগ্রস্তই করছে। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা, যা এখনো তদন্তই হয়নি, সেগুলো নিয়ে সমগ্র শিল্পখাতকে ঘিরে ঢালাও মন্তব্য মোটেও কাম্য নয়। যদি কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা তাদের ডাকবে। তদন্ত করবে এবং যারা সত্যিকার অর্থে কোনো ধরনের অসাধু তৎপরতায় জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনবে।’
তিনি বলেন, বিষয়টিকে এভাবে মিডিয়ার মাধ্যমে জনসম্মুখে তুলে ধরে জাতির কাছে শিল্পকে ছোট করাটা আমরা একটি অপচেষ্টা বলে মনে করি। আমরা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই এবং প্রত্যাখ্যান করছি। যে ১০টি কারখানার বিষয়ে অভিযোগ এসেছে, তার মধ্যে ৪টি বিজিএমইএ’র এবং ২টি বিকেএমইএ’র সদস্য প্রতিষ্ঠান। অবশিষ্ট ৪টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিজিএমই বা বিকেএমইএ’র কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, এ মিথ্যাচারের মাধ্যমে আইনের ব্যত্য়য় ঘটানো হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থার দাবি জানাই। না হলে মালিক-শ্রমিক মিলে আমরা বসে থাকবো না। যেসব কারখানা মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের পাশে থাকবে বিজিএমইএ-বিকেএমইএ।
কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১০টি প্রতিষ্ঠানের বিল অব এক্সপোর্টসমূহ পর্যালোচনায় বিল অব এক্সপোর্ট ও ইএক্সপিতে বর্ণিত তথ্যের মধ্যে মিল পাওয়া যায়নি। বিল অব এক্সপোর্টে উল্লিখিত সাউথ ইস্ট ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ওই ১০ প্রতিষ্ঠানের কোনোটিই ওই ব্যাংকে লিয়েনকৃত নয়।
এছাড়া প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সঙ্গে ওই ব্যাংক সম্পর্কিত নয়। ফলে ব্যাংকটির মাধ্যমে বিল অব এক্সপোর্টে উল্লিখিত সেলস কন্ট্রাক্ট বা ইএক্সপির রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসিত হয়নি বা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
ইএআর/এমএইচআর/জিকেএস