রক্ষা করতে পারলো না বিমা, পতনেই শেয়ারবাজার
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বড় দরপতনের পর দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত পতনই দেখতে হয়েছে বিনিয়োগকারীদের। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের দুই কার্যদিবসহ টানা তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে প্রধান মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
সার্বিক শেয়ারবাজারে দরপতন হলেও গত কয়েক কার্যদিবসের মতো আজও কিছুটা ব্যতিক্রম ছিল বিমা খাত। এ খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে যে কয়টি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে, তার প্রায় অর্ধেক বিমা কোম্পানি।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। অবশ্য পাঁচ মিনিটের মধ্যে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। এতে সূচকও ঊর্ধ্বমুখী হয়।
লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকে। এতে বেলা ১১টার সময় ডিএসইর প্রধান সূচক ১১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু এরপর বিমা খাত বাদে অন্য খাতের একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমতে থাকে। ফলে বিমা খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিতে পারলেও সার্বিকভাবে দরপতনের তালিকা বড় হয়।
দিনের লেনদেন শেষে বিমা খাতের ৩১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯টির। অপরদিকে সব খাত মিলে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৬৭প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৮১টির। আর ১৫২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৮৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১২৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
প্রধান মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের গতিও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৪৬ কোটি ২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫৩৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৮৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
গত কয়েক কার্যদিবসের মতো লেনদেনের শীর্ষ স্থানটি ধরে রেখেছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৫ কোটি ৬৭ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ক্রিস্টাল ইনস্যুরেন্সের ১৮ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৪ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্স, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স এবং এমারেল্ড অয়েল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১৫৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৪টির এবং ৫৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
এমএএস/ইএ/এমএস