টাস্কফোর্স আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা, ডলারের দাম আরও চড়া
খোলাবাজারে বেড়েছে চলেছে ডলারের দাম। অতিরিক্ত দরে ডলার লেনদেন বন্ধ করতে ও বাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে টাস্কফোর্স গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। খুচরা ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে গঠিত টাস্কফোর্সের বিরুদ্ধেই এখন হয়রানিসহ অপেশাদার আচরণের অভিযোগ তুলেছেন ডলার ব্যবসায়ীরা।
অনেক ব্যবসায়ীর অভিযোগ, টাস্কফোর্সের হয়রানি থেকে রেহাই পেতে তারা ডলার লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে ডলারের দাম হয়েছে আরও চড়া। খোলাবাজারে এক ডলারের দাম উঠেছে ১১৮ থেকে ১১৯ টাকা পর্যন্ত। আর এর খেসারত দিচ্ছেন বিদেশগামীরা। বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে তাদের।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল, ফকিরাপুল এলাকার বিভিন্ন মানি চেঞ্জার্স প্রতিষ্ঠান ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: বাড়তি দামে ডলার কেনাবেচা, ৭ মানি চেঞ্জারের সনদ স্থগিত
এসব এলাকায় ডলারের ঘোষিত লেনদেন মূল্য ১১১ টাকা ১০ পয়সা থেকে ১১২ টাকা ৬০ পয়সা হওয়ার কথা। তবে লুকিয়ে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ১১৮ থেকে ১১৯ টাকা। এতে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে বিদেশগামীদের।
শ্রমিক ভিসায় দেশের বাইরে যাবেন মোরসালিন। কয়েকটি মানি চেঞ্জার্স প্রতিষ্ঠান ঘুরে ডলার কিনতে পারেননি তিনি। জাগো নিউজকে মোরসালিন বলেন, ‘দোকান বন্ধ, অনেক দোকানে ডলার পাইনি। দোকানের বাইরে থেকে ১১৯ টাকা রেটে ৫০০ ডলার কিনেছি।’
রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল, ফকিরাপুল এলাকার ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, টাস্কফোর্স হয়রানি ও শারীরিক লাঞ্ছিত করছে। এ কারণে অনেকেই ডলার বেচাকেনা বন্ধ রেখেছেন। এতে ডলারের দাম আরও বেড়েছে।
আরও পড়ুন: ডলারের অস্বাভাবিক দামে গলদঘর্ম ব্যবসায়ীরা
ডলার ব্যবসায়ীরা জানান, রাজধানীর দিলকুশার নিয়ন মানি চেঞ্জার্সের এক বিক্রয়কর্মী ও গুলশানের আব্দুল্লাহ মানি চেঞ্জার্সের বিক্রয়কর্মীকে মারধর করেছেন টাস্কফোর্সের সঙ্গে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এমনকি গ্রাহককে তল্লাশি ও গালিগালাজ করার ঘটনা ঘটেছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
এ বিষয়ে মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব শেখ হেলাল সিকদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘টাস্কফোর্সের প্রধান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক নীতি বিভাগের পরিচালক সরওয়ার হোসেনের সঙ্গে আমরা দেখা করেছি। ব্যবসায়ীদের ওপর টাস্কফোর্সের মারধর, গ্রাহকের শরীর তল্লাশি ও গালিগালাজসহ অপেশাদার আচরণের প্রতিকার চেয়েছি আমরা।’
তিনি বলেন, ‘এমন আচরণ করা হলে কারও পক্ষে ব্যবসা করা সম্ভব না। দোষী হলে অবশ্যই প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিচার হতে পারে। তবে হয়রানি বন্ধ না করা হলে বাজারে লেনদেন আরও কমে যাবে। এতে বাজারে ডলার পাওয়া আরও কঠিন হবে।’
আরও পড়ুন: আন্তঃব্যাংকে ডলারের রেকর্ড দাম
ব্যবসায়ীদের অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মানি চেঞ্জার্সদের মারধরের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাইনি। টাস্কফোর্স ব্যবসায়ীদের ডলার লেনদেনের কাগজপত্র যাচাই করে, এমন আচরণ করার কথা না।’
এর আগে বেশি দামে ডলার বিক্রি করায় গত সপ্তাহে ৭ মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার লাইসেন্স স্থগিত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই অভিযোগে আরও ১০ মানি চেঞ্জারের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছিল।
ইএআর/কেএসআর