সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় বাড়তি কর দিতে হবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:১৩ এএম, ২৪ আগস্ট ২০২৩

সঞ্চয়পত্রের মুনাফাকে আয় হিসেবে গণ্যের যে নতুন নিয়ম যুক্ত হয়েছিল আয়কর আইনে তা সরে এসেছে সরকার। অর্থাৎ সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর অতিরিক্ত কর কর্তন করা হবে না। আগের মতোই শুধুই উৎসে কর কাটা হবে।

অর্থাৎ সঞ্চয়পত্রের মুনাফা থেকে বাড়তি আর কোনো কর আদায় করা হবে না। এটির মুনাফা থেকে উৎসে যে কর কেটে রাখা হবে, সেটিই চূড়ান্ত করদায় হিসেবে বিবেচিত হবে।

বুধবার (২৪ আগস্ট) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। তাতে সঞ্চয়পত্রের মুনাফাকে করদাতার আয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

চলতি বছরের জুনে পাস হওয়া নতুন আয়কর আইনে সঞ্চয়পত্রের মুনাফাকে করদাতার আয় হিসেবে গণ্য করার কথা বলা হয়। এতে ক্ষেত্রবিশেষে করদাতাদের ওপর বাড়তি করের চাপ তৈরির আশঙ্কা দেখা দেয়।

আরও পড়ুন: সঞ্চয়পত্র কোথায় ও কীভাবে কিনবেন?

আইনে বিধান যুক্ত করার কারণে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর নির্ভরশীল করদাতারা হতাশ হন। সে জন্য বিধানটি বাতিলের উদ্যোগ নেয় এনবিআর।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, আগে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা থেকে উৎসে যে কর কাটা হতো, সেটিই করদাতার চূড়ান্ত করদায় হিসেবে বিবেচিত হতো। এর ফলে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা করদাতার আয় হিসেবে যুক্ত হতো না। এখন নতুন প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে আগের সেই অবস্থাতেই ফিরে গেলো এনবিআর।

যেমন- কোনো করদাতার বার্ষিক আয় ১০ লাখ টাকা। ওই করদাতা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে বছরে মুনাফা পান দুই লাখ টাকা। সঞ্চয়পত্রের ওই মুনাফা থেকে ২০ হাজার টাকা উৎসে কর কেটে রাখা হয়। নতুন আয়কর আইনের বিধান কার্যকর হলে সে ক্ষেত্রে করদাতার ১০ লাখ টাকা আয়ের সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের দুই লাখ টাকা মুনাফাও আয় হিসেবে যুক্ত হতো। এরপর ওই করদাতার যে কর নির্ধারিত হতো, তা থেকে ২০ হাজার টাকা উৎসে কর বাদ দিয়ে বাকি কর পরিশোধ করতে হতো। এখন বিধানটি বাদ দেওয়ায় সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্ত দুই লাখ টাকা মুনাফা আর আয় হিসেবে যুক্ত হবে না। এ ক্ষেত্রে উৎসে কর হিসেবে কেটে নেওয়া ২০ হাজার টাকাই চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে বিবেচিত হবে।

আরও পড়ুন: অনলাইনে টিন সার্টিফিকেট করবেন যেভাবে

এছাড়া নতুন আইনে রপ্তানি খাতে সরকারের দেওয়া নগদ সহায়তাবাবদ প্রাপ্ত অর্থকেও রপ্তানিকারকের আয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। গতকাল নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে সেখানেও সংশোধন এনেছে এনবিআর। এর ফলে এখন থেকে নগদ ভর্তুকি থেকে প্রাপ্ত অর্থ রপ্তানিকারকের আয় হিসেবে আর বিবেচিত হবে না। নগদ ভর্তুকির বিপরীতে যে উৎসে কর কাটা হবে, সেটিই চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে গণ্য হবে।

এসবের বাইরে যেসব করদাতার জন্য রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা নেই, তাদের ক্ষেত্রে ব্যাংকের সঞ্চয়ী ও স্থায়ী আমানত থেকে প্রাপ্ত সুদ বা মুনাফা থেকে যে উৎসে কর কাটা হবে, সেটিও চূড়ান্ত করদায় হিসেবে বিবেচিত হবে। নতুন প্রজ্ঞাপনে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত করদাতাদের। এ তালিকায় আছেন বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা প্রভৃতি।

এসএম/এমএইচআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।