আট ফান্ডের ১০১ কোটি টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা
শেয়ারবাজারের মন্দায়ও দেশের বৃহত্তম মিউচ্যুয়াল ফান্ড পরিচালনা করা রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ৮ ফান্ডের ট্রাস্টি ২০২২-২৩ অর্থবছরের ব্যবসায় প্রায় ১০১ কোটি টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এরমধ্যে সোমবার (২১ আগস্ট) চার ফান্ডের ৪১ কোটি টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে গত ১৩ আগস্ট চার ফান্ডের ৬০ কোটি টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছিল।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে চলমান বৈশ্বিক মন্দায় দেশের শেয়ারবাজারও ভালো যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরেই বাজারে এ মন্দা অবস্থা বিরাজ করছে। যাতে শেয়ারবাজার আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে ফান্ডগুলোর ওই সময় মুনাফায় ধস নামে। তারপরও ফান্ডগুলো ভালো লভ্যাংশ ঘোষণা করছে, যা থেকে বাদ যায়নি রেস ম্যানেজমেন্টের ফান্ডগুলোও।
রেসের ৮ ফান্ডের (অতালিকাভুক্ত একটি) ট্রাস্টি ২০২২-২৩ অর্থবছরের ব্যবসায় ১০০ কোটি ৯৪ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এরমধ্যে তালিকাভুক্ত সাত ফান্ডের ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ৯৯ কোটি ৬ লাখ টাকার লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট পরিচালিত আটি ফান্ড থেকে ২১ কোটি ৯৬ টাকার লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।
রেসের আট ফান্ডের মধ্যে সোমবার চারটির ট্রাস্টি গড়ে ৪.১৩ শতাংশ হারে ৪০ কোটি ৭০ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর আগে গত ১৩ আগস্ট চার ফান্ডের (অতালিকাভুক্ত একটি) জন্য গড়ে ৪.৬৩ শতাংশ হারে ৬০ কোটি ১৭ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, মার্কেট সূচক ২০২২-২৩ অর্থবছরে ০.৫ শতাংশ পতন হওয়া সত্ত্বেও মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো নগদ ডিভিডেন্ড দিচ্ছে, তা অ্যাসেট ম্যানেজারদের দক্ষতার পরিচয়। তারা হাতেগোনা ভালো কিছু শেয়ারে বিনিয়োগ এবং রিস্ক ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে এ পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারছেন সার্বিক অর্থনীতি এবং শেয়ারবাজারের প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দিয়েও।
এদিকে ফান্ডগুলো ১০ টাকা অভিহিত মূল্য বিবেচনায় লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও সবগুলোর ইউনিট দর ১০ টাকার নিচে অবস্থান করছে। যে কারণে প্রকৃত লভ্যাংশ (ডিভিডেন্ডইল্ড) ফান্ডগুলোর ঘোষণার তুলনায় বেশি হবে।
সোমবার রেসের সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ হারে (অভিহিত মূল্য বা ১০ টাকা বিবেচনায়) লভ্যাংশ ঘোষণা করা ইবিএলএনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট দর রয়েছে ৬.৫০ টাকা। এই ৬.৫০ টাকার ওপর লভ্যাংশ পাওয়া যাবে ৭০ পয়সা। অর্থাৎ ডিভিডেন্ড ইল্ড বা প্রকৃত লভ্যাংশের হার হবে ১০.৭৭ শতাংশ।
ফান্ডগুলোর মধ্যে সোমবার লেনদেন শেষে সর্বোচ্চ ৬ টাকা ৫০ পয়সা রয়েছে ইবিএলএনআরবি ফান্ড। আর সর্বনিম্ন ৫ টাকা ১০ পয়সায় আছে পপুলার লাইফ ফার্স্ট ফান্ড।
রেস ম্যানেজমেন্টের পরিচালিত তালিকাভুক্ত ফান্ডগুলোর লভ্যাংশের চিত্র
ফান্ডেরনাম |
লভ্যাংশেরহার |
লভ্যাংশের পরিমাণ (কোটি টাকা) |
ইউনিট দর (টাকা) |
ডিভিডেন্ড ইল্ড |
ইবিএলএনআরবি ফান্ড |
৭% |
১৫.৭০ |
৬.৫০ |
১০.৭৭% |
এবি ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড |
৫% |
১১.৯৫ |
৫.২০ |
৯.৬২% |
পপুলার লাইফ ফার্স্ট ফান্ড |
২.৫০% |
৭.৪৮ |
৫.১০ |
৪.৯০% |
পিএইচপি ফার্স্ট ফান্ড |
২% |
৫.৬৪ |
৫.২০ |
৩.৮৫% |
এর আগের গত ১৩ আগস্ট রেসের ৪ ফান্ডের (অতালিকাভুক্ত ১টি) ট্রাস্টি ৪.৬৩ শতাংশ হারে ৬০ কোটি ১৭ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এর মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩ ফান্ডের ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ৪.৩৩ শতাংশ হারে ৫৮ কোটি ২৯ লাখ টাকার লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়।
১৩ আগস্ট লভ্যাংশ ঘোষণা করা ফান্ডগুলোর চিত্র
ফান্ডের নাম |
লভ্যাংশের হার |
লভ্যাংশের পরিমাণ (কোটি টাকা) |
ইউনিট দর (টাকা) |
ডিভিডেন্ড ইল্ড |
ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ফান্ড |
৫% |
৩৮.৮১ |
৫ |
১০% |
ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড |
৫% |
১৫.১৮ |
৫.৬০ |
৮.৯৩% |
এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড |
৩% |
৪.৩০ |
৫.৮০ |
৫.১৭% |
এ বছর রেস ম্যানেজমেন্ট পরিচালিত শেয়ারবাজারে অতালিকাভুক্ত রেস স্পেশাল অপরচুনিটিজ ইউনিট ফান্ড থেকে ৫.৫০ শতাংশ হারে ১ কোটি ৮৮ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।
এমএএস/এমকেআর/এএসএম