আহসান খান চৌধুরী
করোনায় কৃষি থেকে সহায়তা না এলে এমন সম্মেলনে দাঁড়ানো সম্ভব ছিল না
দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী বলেছেন, বিগত করোনার সময় দেশের কৃষিখাত থেকে যদি সহায়তা না আসতো তাহলে এমন সম্মেলনে দাঁড়ানো আমাদের সম্ভব ছিল না। কৃষিতে অনেক কাজ হয়েছে, কারণ আপনার (প্রধানমন্ত্রীর) পরামর্শ ছিল যে, দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। আপনি নিজেও গণভবনে এর উদাহরণ আমাদের দেখিয়েছেন। আপনি যেভাবে কৃষি নিয়ে কাজ করেছেন, এটা শুধু আমাদের নয় বিশ্বের জন্য বড় উদাহরণ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশের কৃষি ও অর্থনীতি এতদূর এগিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আহসান খান চৌধুরী বলেন, ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের কৃষিখাত নেদারল্যান্ডস, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামের মতো উন্নত হবে।
শনিবার (১৫ জুলাই) স্মার্ট বাংলাদেশ ব্যবসায়ী সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এ সম্মেলনের আয়োজন করে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন>> কৃষিপণ্য রপ্তানিতে সিআইপি সম্মাননা পেলেন আহসান খান চৌধুরী
তিনি বলেন, দেশের ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যচাহিদা ব্যাপক বাড়বে। আপনার ওই প্রতি ইঞ্চি আবাদি জমির স্বপ্ন আমাদের সেই জায়গায় এগিয়ে নেবে। ছোট্ট দেশ থাইল্যান্ড যদি পারে, ভিয়েতনাম যদি পারে, আমরাও পারবো। কারণ আমরা আপনার সৈনিক। আমরা ভীষণভাবে দেশপ্রেমী। ব্যবসায়ীরা রাজনীতি না করলেও ভীষণভাবে দেশকে ভালোবাসেন। তাই আপনার কাতারে যোগ দিয়ে এ দেশকে সে পর্যন্ত এগিয়ে নিতে চাই।
আহসান খান চৌধুরী বলেন, আমরা কৃষি বহুমুখীকরণে কাজ করছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে কাসাভা উৎপাদনে গিয়েছি, আর কী কী করা যায় সেজন্য আপনি আমাদের নেদারল্যান্ডসে পাঠিয়েছেন। ওরা পেরেছে, আমরাও পারবো, সেটা আপনার নেতৃত্বে। আশা করি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমাদের আদেশ দেবেন, সেটা বাস্তবায়ন করে যাবো।
তিনি বলেন, কৃষি প্রক্রিয়াকরণে আমরা কাজ করছি, আগামীদিনেও করবো। আপনি যেভাবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছেন, তাতে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ যদি ভালো হয়, আমরা আরও এগিয়ে যাবো। এ পর্যন্ত পৃথিবীর ১৪৫টি দেশে আমাদের পণ্য রপ্তানি করেছি। আপনি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে ভারতের বাজারে পণ্য বাজারজাত করার জন্য উৎসাহিত করেছেন। ভারত শুধু নয়, পৃথিবীর অধিকাংশ অঞ্চলে বাংলাদেশি পণ্য ভালো করছে। আপনার রপ্তানি বহুমুখীকরণের স্বপ্ন পূরণ হবে প্রধানমন্ত্রী।
দেশে ডলারের সংকট ব্যবসায়ীদের প্রচেষ্টায় কেটে যাবে মন্তব্য করে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, ডলারের জন্য প্রধানমন্ত্রী বিচলিত হবেন না। এটা সাময়িক সংকট। দেশের ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত প্রগতিশীল। তারা ভালো করবেন, এ সংকট কেটে যাবে। বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে ব্যবসায়ী হিসেবেও এগিয়ে যাবে।
পদ্মা সেতু ব্যবসাকে সহজ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামো নিয়ে অনেক কাজ করেছেন। সবচেয়ে সুন্দর হয়েছে আমাদের পদ্মা সেতু। এখন গোপালগঞ্জের সবজি গুলশানে বিক্রি হবে, ঢাকায় তৈরি আমাদের রুটি দক্ষিণের সব মানুষ পাবেন। এ বাংলাদেশে সব ব্যবসা একীভূতকরণের মাধ্যমে আরও উত্তরোত্তর ভালো করবে।
আরও পড়ুন>> শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী চান এফবিসিসিআই সভাপতি
দেশের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আহসান খান চৌধুরী বলেন, সাত যুগ ধরে আপনার বাবা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আপনার পরিবারের প্রতিটি সদস্য এবং আপনি যেভাবে দেশের জন্য প্রাণ নিবেদিত করে কাজ করছেন, এতে আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা আপনার সঙ্গে আছি। আপনি যেভাবে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছেন, সেই একই কাতারে দাঁড়িয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো।
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে অনুষ্ঠিতব্য এ ব্যবসায়ী সম্মেলনে সারাদেশের চেম্বার, বিশেষায়িত চেম্বার, পণ্যভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠন, রপ্তানিকারক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠনের নেতারা যোগ দেন। পাশাপাশি শীর্ষস্থানীয় করপোরেট প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী, বিদেশি ব্যবসায়ী অংশীদার, আমদানি-রপ্তানিকারক দেশগুলোর ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
এসময় ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের ট্রিলিয়ন (এক লাখ কোটি) ডলারের অর্থনীতির পথে সম্ভাবনা ও সমস্যার কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে তুলে ধরেন।
এনএইচ/ইএ/জেআইএম