বিটিএর চিঠি

সংরক্ষণ ত্রুটিতে প্রতিবছর ৩০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:১৯ পিএম, ২৫ জুন ২০২৩
ফাইল ছবি

যথাযথ সংরক্ষণ ত্রুটির কারণে প্রতিবছর প্রায় ৩০ শতাংশ পশুর চামড়া নষ্ট হয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ)। সংগঠনটি বলছে, ঈদুল আজহায় ৫০ শতাংশ বা অর্ধেক কাঁচা চামড়া সংগৃহীত হয়, যার পরিমাণ প্রায় এক কোটি ২৫ লাখ পিস।

বিটিএর তথ্য মতে, চামড়ার গুণগত মান নির্ভর করে যথাযথভাবে চামড়া ছাড়ানো, সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ওপর। পশুর শরীর থেকে সঠিকভাবে চামড়া ছাড়ানো ও যথাযথ সংরক্ষণের ত্রুটির কারণে প্রতিবছর ৩০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হয়।

রোববার (২৫ জুন) বাণিজ্যমন্ত্রীকে দেওয়া এক চিঠিতে এসব তথ্য জানিয়েছে বিটিএ।

চিঠিতে কোরবানির পশুর চামড়ার গুণগত মান বজায় রাখা ও ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় তুলেছে ধরা হয়েছে।

বিটিএ মনে করে, কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের জন্য লবণ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কাঁচা চামড়া প্রাথমিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শুধু কোরবানির ঈদে প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন লবণের চাহিদা রয়েছে। কোরবানির ঈদের সময় লবণের দাম বাড়ে। বাজারে কৃত্রিম সংকট এবং লবণের দাম যেন না বাড়ে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে সারাদেশে পর্যাপ্ত লবণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে এ বছরও ঈদুল আজহার সময় তাপমাত্রা বেশ চড়া থাকবে। ফলে চামড়া সংরক্ষণ করা কঠিন হয়ে পড়বে। এ পরিস্থিতিতে যারা পশু কোরবানি দেবেন, তারা চামড়া ছাড়ানোর কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের দ্বারা কাঁচা চামড়ায় যথাসময়ে পরিমাণ মতো লবণ লাগিয়ে রাখলে কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ সহজ হবে। কাঁচা চামড়ায় যথাযথভাবে লবণ লাগানোর বার্তা সারাদেশে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, স্থানীয় মাদরাসা বা এতিমখানায় যারা চামড়া সংগ্রহ করেন, তাদের লবণ লাগানোর বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এক্ষেত্রে পশু সম্পদ বিভাগ, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক), স্থানীয় প্রশাসন, তথ্য কর্মকর্তা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভূমিকা রাখতে পারে।

এছাড়া দেশের অভ্যন্তরে কোরবানির পশুর চামড়া পরিবহনে যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। সীমান্তসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে তদারকি বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে হবে।

চামড়া সংগ্রহের জন্য ট্যানারি শিল্পের অনুকূলে ৫০০-৬০০ কোটি টাকা ঋণের ব্যবস্থা এবং ব্যাংক ঋণ বিতরণকালে কোনো ছিনতাই বা অঘটন রোধে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় ঈদের দিন রাত ১০টার আগে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং পরিবহন নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে।

দেশব্যাপী বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে নির্দেশনা দিতে হবে। ব্যাপকভাবে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কোরবানির আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের লেদার সেক্টর বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের (এলএসবিপিসি) সহযোগিতায় লেস্-কাট হ্রাসকরণ ও কাঁচা চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও পরিবহনে সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যমে প্রয়োজনীয় প্রচারের ব্যবস্থা নিতে হবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, দেশের বিভিন্ন হাট, ২৬৬টি বড় ও এক হাজার ৬০০টি মাঝারি আকারের, এছাড়াও ছোট আকারের আড়ত থেকে ট্যানারি মালিক ও বাণিজ্যিক রপ্তানিকারকরা ঈদের পর প্রায় তিন মাস ধরে লবণযুক্ত কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করেন।

রাজধানীর পোস্তা ও আমিন বাজার, নাটোরের নাটোর রেলওয়ে বাজার, যশোরের রাজারহাট, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী, রংপুরের তারাগার, নওগাঁর মাতারী, ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ, টাঙ্গাইলের পাকুটিয়া, কিশোরগঞ্জের কিশোরগঞ্জহাট, কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ, চট্টগ্রামের আতুরা ডিপো ও গাজীপুরের টঙ্গী এলাকাসহ উল্লেখযোগ্য আড়তগুলোতে প্রাথমিকভাবে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও মজুত করা হয়ে থাকে।

আইএইচআর/এমকেআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।