চিনি-পেঁয়াজে অস্থিরতা কাটেনি
‘চিনি বিক্রি করি না। কোম্পানি মাল দেয় না, উল্টাপাল্টা, মর্জি মতো দাম রাখে। কাস্টমারের সঙ্গে ঝামেলা হয়।’
চিনি বিক্রি না করার কারণ জানতে চাইলে এমনটাই জানালেন রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী আবদুল আজিজ।
রোববার (১১ জুন) হাতিরপুল বাজারে একাধিক দোকানে মেলেনি চিনির হদিস। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজও নেই বেশিরভাগ দোকানে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। আর আদার দাম ঘুরপাক খাচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকায়।
কিছু দোকানে চিনি মিললেও তা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ৫-১০ টাকা বেশি।
ভাই ভাই জেনারেল স্টোর নামে একটি দোকানে প্রতি কেজি খোলা সাদা চিনি ১৩০ টাকা আর প্যাকেটজাত লাল চিনি ১৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। কয়েকটি দোকানে সাদা চিনি বিক্রি না হলেও মিলেছে লাল প্যাকেট চিনি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত ১০ মে চিনির দাম নির্ধারণ করে। মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পরিশোধিত খোলা চিনির দাম নির্ধারণ করা হয় প্রতি কেজি ১২০ টাকা এবং প্যাকেটজাত পরিশোধিত চিনির দাম প্রতি কেজি ১২৫ টাকা।
আরও পড়ুন: সয়াবিন তেলের দাম কমলো লিটারে ১০ টাকা
কোম্পানির কাছ থেকে পণ্য না পাওয়া ও একেক সময় একেক দামে পণ্য পাওয়ায় সরকার নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি করা যাচ্ছে না বলে বিক্রেতারা জানান।
লোকমান জেনারেল স্টোরের মালিক খলিল জাগো নিউজকে বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি করতে না পারলে নানান কথা শুনতে হয়। বাস্তবতা হচ্ছে এই দামে আমরা কিনতেও পারি না। এজন্য চিনি বিক্রি করি না। অল্প কিছু দোকানে চিনি পাবেন।
বাজারে প্রতি কেজি দেশি আদা ৩২০-৩৪০ টাকা এবং ইন্দোনেশিয়ার আদা ৩৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সাজিদ হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় আদা ও পেঁয়াজের দাম কমেছে। কেজিপ্রতি পেঁয়াজে ২০ টাকা, আদায় ৫০ টাকা কমেছে। ভারতীয় পেঁয়াজ আসায় দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে।
পেঁয়াজের ঊর্ধ্বমুখী দাম ঠেকাতে গত সপ্তাহ থেকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। আমদানি শুরু হলেও আশানুরূপ দাম কমেনি পেঁয়াজের।
আরও পড়ুন: মাছের বাজার চড়া, কমেছে পেঁয়াজ-মুরগি-সবজির দাম
হাতিরপুল বাজারে কথা হয় গৃহিণী শারমিন রিনির সঙ্গে। তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম ৩০-৩৫ টাকায় নেমে আসবে শুনেছিলাম। কিন্তু দাম প্রায় আগের মতোই। বাজারে চিনিও নেই। বাজার নিয়ন্ত্রণে শক্ত পদক্ষেপ না নিলে কোরবানি ঈদের আগে জিনিসপত্রের দাম আরেক দফা বাড়বে।
আদা ও পেঁয়াজের দাম প্রসঙ্গে ওই বাজারের ব্যবসায়ী আজিজ বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ আসা শুরু করেছে। পুরোদমে বাজারে এলে দেশি পেঁয়াজের দাম আরও কমবে। অন্যদিকে বাজারে চীনা আদার সরবরাহ এখন কম। এ কারণেই দাম বেশি। মূলত চীনা আদাই বাজার দখল করে থাকে। পাহাড়ি আদা এলে এই পণ্যের দাম কিছুটা কমতে পারে।
এসএম/এমএইচআর/জিকেএস