বেনারসি পল্লিতে ক্রেতা খরা, হতাশ ব্যবসায়ীরা
মিরপুরের বেনারসি পল্লি। প্রায় সব দোকানই ক্রেতা শূন্য। অলস সময় পাড় করছেন দোকানীরা। তাদের কেউ কেউ মোবাইলে ভিডিও দেখছেন, আবার কেউ করছেন গল্প।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে দেখা গেলো, বলার মতো কোনো দোকানেই বেচাকেনা নেই। এই অবস্থায় হতাশা প্রকাশ করলেন ব্যবসায়ীরা। সাত রোজা চলে গেলেও বেচাকেনা শুরু হয়নি।
জামদানি কালেকশনের স্বত্বাধিকারী সুমন জাগো নিউজকে বলেন, ভেবেছিলাম মেট্রোরেল হওয়ার পর ক্রেতা বাড়বে। কিন্তু তা হয়নি। কোনো বিক্রি হয়নি, আজকেও দুপুর ১২টা পর্যন্ত ক্রেতা নেই। তাই ছোট ভাইকে গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছি। ১৫ রোজার পর দোকান জমলে ঢাকায় নিয়ে আসবো।
আরও পড়ুন: ‘কর্মকর্তাদের দুর্নীতিতে বেনারসি পল্লি প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে’
তিনি বলেন, এখানে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১২শ টাকায় শাড়ি মেলে। এবার সবচেয়ে কম দামের শাড়ির দোকানে বিক্রি কম, বড় দোকানেও কাস্টমার নেই।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজান মাসে বিক্রি হয় বেনারসি পল্লিতে। এবার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এই মার্কেটমুখী হচ্ছেন না ক্রেতারা। আগামী মাসের শুরুতে কিংবা ক্রেতাদের পকেটে বেতন-বোনাস ঢুকলে কিছুটা কেনাকাটা বাড়বে।
আরও পড়ুন: মালামালের দাম বৃদ্ধি-কারিগর সংকট, বন্ধ হচ্ছে বেনারসি কারখানা
‘ইচ্ছে বেনারসি’র স্বত্বাধিকারী সুলতান মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, গতকাল মাত্র একটা শাড়ি বিক্রি হয়েছে। মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না। দৈনন্দিন কেনাকাটা করতেই হাঁপিয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, মানুষের সঞ্চয় থাকলে তারা কেনাকাটা করে। আগামী মাসে বেতন-বোনাস হলে ক্রেতারা আসবেন। তখন হয়তো কিছু বেচাকেনা হবে, তবে খুব বেশি কিছুর আশা করি না। আমাদের ব্যবসা মূলত বিয়ে ও অনুষ্ঠান কেন্দ্রিক। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসে আমাদের ব্যবসা হয়।
ঈদে সুতি ও জর্জেটের শাড়ির চাহিদা বেশি বলে জানান বিক্রেতারা। মিরপুরী বেনারসি কাতান, জামদানি, রাজশাহী সিল্ক, টাঙ্গাইল শাড়ির পাশাপাশি ভারত থেকে আমদানি করা বেনারসি, জর্জেট, চেন্নাই কাতান, টসরসহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ির চাহিদা থাকে।
আরও পড়ুন: তাজহাট জমিদার বাড়ি ও বেনারসি পল্লী
বেনারসি পল্লিতে ঘুরে ঘুরে শাড়ি দেখছিলেন মুগদাপাড়ার বাসিন্দা শাম্মি আখতার মিতা। তিনি বলেন, ঈদের জন্য থ্রি-পিস কেনা হয়েছে। এবার শাড়ি কেনার পালা। এ কারণে শো-রুমগুলো ঘুরে ঘুরে শেষ পর্যন্ত পছন্দের শাড়িটি কেনা হবে। ক্রেতা কম হওয়ায় স্বাচ্ছন্দ্যে শাড়ি দেখা যাচ্ছে।
ক্রেতা কম হওয়ার পেছনে যানজটকেও দুষছেন বিক্রেতারা। রূপ মোহিনী গ্যালারির বিক্রয়কর্মী বাদশা বলেন, রাস্তাঘাটের বাজে অবস্থা। এতো জ্যাম পার হয়ে কাস্টমার আসতে চায় না। বাসার কাছে যে মার্কেট পায় সেখান থেকেই কিনে কিংবা অনলাইন থেকে কেনে।
এসএম/জেডএইচ/এমএস